You are here
Home > Blog > FAO এর ‘এক দেশ এক অগ্রাধিকার পণ্য’ বাংলাদেশের কাঁঠাল

FAO এর ‘এক দেশ এক অগ্রাধিকার পণ্য’ বাংলাদেশের কাঁঠাল

FAO এর উদ্যোগে বাংলাদেশের অবহেলিত কাঁঠাল রপ্তানি বানিজ্যে নতুন মাত্রা যোগ করে দেশের স্টার ফ্রুট হিশেবে স্বীকৃত হতে যাচ্ছে। জাতিসংঘের ফুড এন্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন ‘এক দেশ এক অগ্রাধিকার পণ্য’ (One Country One Priority Product-OCOP) প্রকল্পটি শুরু করেছে দেশের ক্ষুদ্র কৃষক এবং উদ্যোক্তাদেরকে সহায়তা করার জন্য, গ্লোবালি তাদেরকে কানেক্ট করার জন্য।

বাংলাদেশের জাতীয় ফল পুষ্টিকর কাঁঠাল দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যাপক পরিসরে জন্মানো ফলগুলোর একটি, যার বিশাল সম্ভাবনার প্রায় পুরোটাই অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে তাই জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) কাঁঠালের উৎপাদন এবং বিশ্বব্যাপী সঠিক উপায়ে এর প্রচার, ব্র‍্যান্ডিং ও বাজারজাতকরণে সহায়তা করে এর সম্ভাবনাকে কাজে লাগাবে। আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁঠাল থেকে তৈরি বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে, যার উল্লেখযোগ্য অংশ বাংলাদেশ দখল করতে পারে।

বার্ষিক উৎপাদনের দিক থেকে, আমের পরেই কাঁঠাল বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ফল, যা দেশের মোট ফল উৎপাদনের এক-পঞ্চমাংশেরও বেশি। এটি ভিটামিন, খনিজ পদার্থ এবং ক্যালরির উৎস হিশেবে দেশের মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। পুষ্টিগত দিক থেকে কাঁঠালের এতোটা গুরুত্ব এবং দেশের চাহিদা মেটানোর পর এর বিশাল অংশ উদ্ধৃত্ত থাকার পরও দেশের রপ্তানি বানিজ্যে এই ফল ভ্যালু এড করার সুযোগ পাচ্ছে না, এটি সবচেয়ে অবহেলিত থেকে যাচ্ছে।

মাত্র ১২টি উদ্ভিদ প্রজাতি বিশ্বের ৭৫ শতাংশ খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করে। তাই বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি এবং জীবিকা ব্যবস্থা আরও উন্নত করার জন্য কাঁঠালের মতো এমন অব্যবহৃত বিশেষ কৃষি পণ্যের (Special Agricultural Products-SAPs) ব্যবহার বৃদ্ধি করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ সরকার FAO-এর ‘এক দেশ এক অগ্রাধিকার পণ্য’ উদ্যোগের অধীনে কাঁঠালকে নির্বাচন করেছে। FAO-এর অন্তর্ভুক্ত পাঁচটি অঞ্চলের ৮০টি দেশকে এই প্রকল্পের জন্য সম্ভাব্য প্রকল্প দেশ হিশেবে মনোনীত করা হয়েছে, যার উদ্দেশ্য হলো এই দেশগুলোর ৫০টি বিশেষ কৃষি পণ্য (SAPs) কে বিশ্বব্যাপী পরিচিত করা, এগুলোর ব্র‍্যান্ডিং করা। বাংলাদেশকে মিশর, ত্রিনিদাদ, মালাউই, টোবাগো, উজবেকিস্তান সহ এই প্রকল্পের প্রথম ৫টি দেশের একটি হিশেবে নির্বাচিত করা হয়েছে, যে দেশগুলোকে প্রদর্শনী দেশ বা মডেল দেশ হিশেবে প্রকল্পের অন্য দেশগুলোর সামনে প্রেজেন্ট করা হবে। FAO-এর ‘উন্নত উদ্ভিদ উৎপাদনের জন্য উদ্ভাবনী পদ্ধতি’ নামের আরেকটি প্রকল্প উন্নত ফসল উৎপাদন এবং বিশেষ কৃষি পণ্যের (SAPs) ব্র‍্যান্ডিং ও বিপণনে  ‘এক দেশ এক অগ্রাধিকার পণ্য’ বা OCOP উদ্যোগ বাস্তবায়নে দেশগুলোকে সহায়তা করবে। প্রকল্পটি খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করবে, দৈনিক সুষম খাদ্যের উন্নতি ঘটাবে, প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ কাঁঠালের অপচয় রোধ করবে এবং বাংলাদেশের ক্ষুদ্র কাঁঠাল চাষী ও উদ্যোক্তাদের আয় বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।

FAO এর প্রকল্প

বিশ্বব্যাপী খাদ্যশস্য, গবাদিপশুর খাদ্য, ফাইবার, জ্বালানি সবকিছুর চাহিদাই বাড়ছে এবং এই বিশাল চাহিদা পূরণে মানুষ বিভিন্ন শস্য, বনজ সম্পদ, পশুসম্পদ, জলজ সম্পদ, মৎস্য সম্পদ প্রভৃতি কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থার উপরই পুরোপুরি নির্ভরশীল। তবে পরিবেশবান্ধব টেকসই উপায়ে উৎপাদন বৃদ্ধি করা, সাধ্যের মধ্যে স্বাস্থ্যকর খাবার ব্যবস্থা করা এবং একইসাথে কৃষির সাথে জড়িত ক্ষুদ্র কৃষক, উদ্যোক্তা এবং কৃষি পরিবারগুলোর জীবনযাত্রার মানোয়ন্নন করা বর্তমানে অন্যতম বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ। কৃষিতে এখনো বৈচিত্র্যময় উদ্ভাবনের অভাব রয়েছে, এর উৎপাদন ব্যবস্থা এখনো রাসায়নিকের ব্যবহার এবং প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নির্ভর করে চলছে। এছাড়াও বিশ্বের ক্রমবর্ধমান খাদ্য সরবরাহ স্বল্প কিছু প্রজাতির উদ্ভিদ এবং প্রাণির উপর নির্ভরশীল যা সম্পূর্ণ চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে। আর তাই এই বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা OCOP প্রকল্প শুরু করেছে।

• OCOP কী?


One Country One Priority Product – OCOP বা ‘এক দেশ এক অগ্রাধিকার পণ্য’ হলো জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) এর একটি প্রকল্প, যা FAO এর স্ট্র‍্যাটেজিক ফ্রেমওয়ার্ক ২০২২-২০৩১ বাস্তবায়ন করতে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য মূলত  FAO এর সদস্য দেশগুলোর বিশেষ কৃষি পণ্যের (SAPs) গ্রিন ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে টেকসই কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থার সাথে অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশের সামঞ্জস্যপূর্ণ সংযোগ স্থাপন করে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অবদান রাখা। বিশেষ কৃষি পণ্যের গ্রিন ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে OCOP লাভজনক এবং পরিবেশবান্ধব টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চায়। বিশেষ কৃষি পণ্যের সর্বোচ্চ উৎপাদন এবং ব্যবহার নিশ্চিত করা, এসব কৃষিপণ্য এবং খাদ্যের অপচয় রোধ করা, কৃষিতে রাসায়নিকের ব্যবহার কমানো, ক্ষুদ্র কৃষক এবং কৃষি উদ্যোক্তাদের সর্বোচ্চ লাভ নিশ্চিত করা এবং তাদের জীবনযাত্রার টেকসই উন্নয়নে অবদান রাখাই এই প্রকল্পের লক্ষ্য।

• SAPs কী?

Special Agricultural Products- SAPs বা ‘বিশেষ কৃষি পণ্য’ হলো সেই সব কৃষি পণ্য যেগুলোর অনন্য গুণাবলি এবং বিশেষ বৈশিষ্ট্য উৎপাদন এলাকার ভৌগোলিক অবস্থান এবং ঐতিহ্য সংস্কৃতির সাথে সম্পর্কিত। এ ধরনের কৃষি পণ্য খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার পাশাপাশি কৃষকদের জীবিকা ও অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখতে পারে। SAPs ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্যের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত, কিন্তু  এর মাঝে সীমাবদ্ধ নয়।
এমন সব ধরনের কৃষি পণ্য SAPs এর অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, যা স্থানীয় বা জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃত ও জনপ্রিয় পণ্য বা স্বীকৃত ও জনপ্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা আছে, কিন্তু সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে এখন পর্যন্ত এগুলোর মাধ্যমে স্থানীয় কৃষি এবং গ্রামীন উন্নয়ন সম্ভব হয় নি। স্থানীয়, আঞ্চলিক, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে এ ধরনের বিশেষ কৃষি পণ্যের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে, যা কাজে লাগানোই FAO এর OCOP প্রকল্পের উদ্দ্যেশ্য।

  • FAO এর এই OCOP প্রকল্পের অধীনে বাংলাদেশের নির্বাচিত বিশেষ কৃষি পণ্য (SAPs) কাঁঠালের ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই স্বীকৃতি প্রাপ্তির জন্যও সর্বাত্মক সহযোগিতার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই কাঁঠালের জিআই আবেদনের জন্য ডকুমেন্টেশন তৈরির প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করা যায়, খুব শীঘ্রই বাংলাদেশের কাঁঠাল জিআই স্বীকৃতি লাভ করে এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য সফল করতে ভূমিকা রাখবে এবং প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য দেশের জন্য আদর্শ উদাহরণ তৈরি করবে।

বাংলাদেশের বাইরে অন্যান্য দেশে কাঁঠালের জিআই প্রাপ্তি এবং চেষ্টা

থাইল্যান্ডের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মেধাস্বত্ব বিভাগের ঘোষণা থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৩ মে থাইল্যান্ডের পাননিকর্ন কাউন্টির চনবুরি প্রদেশের ‘নং হিয়াং কাঁঠাল’ ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিশেবে নিবন্ধিত হয়েছে। জানা গেছে যে, নং হিয়াং কাঁঠালের চামড়া পাতলা, এর শাঁস বড় ও ছোট, মিষ্টি এবং সুস্বাদু। এই থাই কাঁঠালের জিআই নিবন্ধন তাদের স্থানীয় কৃষকদের আয় বৃদ্ধি, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, কৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে প্রতি বছর স্থানীয় কৃষকরা ৮৫০ মিলিয়ন থাই বাথের বেশি আয় করতে পারবে এবং চীন, ভিয়েতনাম সহ অন্যান্য দেশে বছরে প্রায় ১০৬ মিলিয়ন মূল্যের কাঁঠাল রপ্তানি করতে পারবে। (https://min.news/en/world/ea56cc0689cee74f4bf8b73fd197a125.html )

• ২০১৮ সালে ভারতের ত্রিপুরার কাঁঠালের জিআই ট্যাগের আবেদন করা হয়েছিল যা বাতিল করা হয়েছে। কারণ হিশেবে জিআই এর বিশেষজ্ঞ কমিটি জানিয়েছে যে, আবেদন অসম্পূর্ণ ছিল এবং ত্রিপুরার কাঁঠাল খুব বেশি পুরনো কোনো পণ্য নয়। তবে এরপরও কমিটি থেকে  সুযোগ দেয়া হয়েছিল এই অঞ্চলের কাঁঠালের ঐতিহাসিক দলিল, গুনাবলি ও স্বতন্ত্র বিশেষত্বের প্রমাণ উপস্থাপন করার জন্য, যা আবেদনকারিরা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এই আবেদন বাতিল করা হয়েছে। ( https://www.latestlaws.com/amp/intellectual-property-news/tripura-lost-gi-tag-for-a-new-variety-of-jack-fruit )

• ভারতের মধ্য প্রদেশের নর্মদাপুরম জেলার কৃষকরা এই অঞ্চলের কাঁঠালের ভৌগলিক নির্দেশক (জিআই) ট্যাগ এর দাবি করেছেন। তাদের মতে নর্মদা নদী থাকার কারণে এখানকার কাঁঠালের স্বাদে আলাদা বিশেষত্ব রয়েছে এবং এই রাজ্যের রাজধানী ভোপাল এবং রাজ্যের অন্যান্য শহরগুলির বাজারে নর্মদাপুরমের কাঁঠালের অনেক বেশি চাহিদা রয়েছে৷ কাঁঠাল চাষের জন্য কোনো বিনিয়োগের প্রয়োজন হয় না, তাই উৎপাদনের পর থেকে ৩০-৪০ বছর পর্যন্ত কৃষক যা পায় তার পুরোটাই লাভ। নর্মদাপুরমের কাঁঠাল জিআই ট্যাগ পেলে কাঁঠালের উপযুক্ত দাম পাবে, ব্র‍্যান্ডিং এর মাধ্যমে এর আরও চাহিদা বৃদ্ধি করা যাবে, এতে কৃষকরা আরও লাভবান হবে এবং অঞ্চলভিত্তিক অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে বলে এখানকার কৃষকরা বেশ আশাবাদী। ( https://www.freepressjournal.in/amp/bhopal/farmers-demand-geographical-indication-tagging-for-narmadapurams-jackfruit)

• দক্ষিণ ভারতের ভাদাকাদু এবং পুদুকোট্টাইয়ের আশেপাশের গ্রামগুলির কাঁঠাল চাষীরা তাদের অঞ্চলে উৎপাদিত কাঁঠালের ভৌগলিক নির্দেশক (জিআই) ট্যাগ দাবি করেছে। কাঁঠালের জিআই ট্যাগের আবেদন করার জন্য কৃষক এবং বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি দল গঠন করা হয়েছে। এই অঞ্চলের কাঁঠাল তামিলনাড়ু এবং কেরালায় বেশ জনপ্রিয়। ভাদাকাদুতে বছরে প্রায় দেড় লাখ টন কাঁঠাল উৎপাদিত হয়। দক্ষিণ ভারতের কেরালা, পানরুতি এবং ভাদাকাদুতে প্রচুর পরিমাণ কাঁঠাল উৎপাদন হয়। তবে কেরালা এবং পানরুতির কাঁঠালের তুলনায় ভাদাকাদুর কাঁঠাল স্বাদে সমৃদ্ধ, এর আলাদা বিশেষত্ব রয়েছে। এই অঞ্চলের পানিতে লবনাক্ততা কম থাকায় এবং এর লাল মাটিতে জন্মানো এই কাঁঠালে আঁশ কম হয়, রং ও আলাদা হয়।। এটি জিআই হলে সারাবিশ্বের ক্রেতাদের জন্য এই অঞ্চলের কাঁঠাল রপ্তানির পথ উন্মুক্ত হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ( https://www.newindianexpress.com/states/tamil-nadu/2023/may/16/farmers-form-team-to-demand-gi-tag-for-vadakadu-jackfruit-2575393.amp)

• ভারতের তামিলনাড়ুর পানরুতির কাঁঠালের জিআই এর জন্যও আবেদন করা হয়েছে। এটি ভারতের একমাত্র অঞ্চল যেখানে ৮০০ হেক্টর জমি জুড়ে মনোক্রপ বা একক ফসল হিশেবে শুধুমাত্র কাঁঠাল উৎপাদন হয়, যার বার্ষিক পরিমান ৪৫০০০ থেকে ৫০০০০ মেট্রিক টন। এ অঞ্চলের অনেক কৃষক, বিশেষ করে নারী এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জীবনযাত্রা কাঁঠাল উৎপাদনের উপর নির্ভরশীল। একজন সরকারি উকিল কৃষকদের একটি সমিতির পক্ষ থেকে পানরুতির কাঁঠালের জিআই আবেদনটি করেছেন। (https://www.thenewshamster.com/home-to-indias-sweetest-jackfruits/?amp=1)

ভারতের কয়েকটা অঞ্চলের কাঁঠালের আলাদা আলাদা জিআই আবেদনের চেষ্টার বিষয়টা বেশ লক্ষ্যনীয়। আর এখানে আরেকটা খুব গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যনীয় বিষয় হচ্ছে, তাদের প্রত্যেকটা জিআই আবেদন করেছে একদম রুট লেভেলের কৃষকরা অর্থাৎ স্থানীয় কৃষকদের এসোসিয়েশন বা সমিতি। এই ব্যাপারটা অনুসরণীয়, শিক্ষনীয়। কারণ স্থানীয় কৃষকদের এমন সচেতনতা নিঃসন্দেহে যে কোনো দেশের কৃষি পণ্যের জিআই সম্ভাবনা বহুগুন বাড়িয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। আমাদের দেশেও কৃষকদেরকে এই বিষয়ে সচেতন করতে পারলে কৃষি পণ্যের জিআই নিয়ে চেষ্টা অনেক সহজ হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে এলাকাভিত্তিক কৃষি অফিসগুলোর মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচন করে কৃষকদের কে এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া যায়, জিআই পণ্যের গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা দেয়া যায়।

আরেকটা ব্যাপার হলো, পুরো ভারতের মাঝে দক্ষিণ ভারত কাঁঠাল উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি সমৃদ্ধ। আর যে দুই অঞ্চলের কাঁঠালের জিআই এর জন্য এখন বেশি চেষ্টা চলছে; ভাদাকাদু এবং পানরুতি; এই দুই অঞ্চলই দক্ষিণ ভারতের অংশ অর্থাৎ পাশাপাশি অঞ্চল বলা যায়। পাশাপাশি দুই অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি কাছাকাছি হওয়ায় কাঁঠালের স্বাদ এবং বিশেষত্বেও খুব বেশি পার্থক্য থাকার কথা না। তারপরও তারা আলাদা আলাদা জিআই এর জন্য চেষ্টা করছে, হতে পারে কিছু না কিছু ইউনিক বৈশিষ্ট্য দুই অঞ্চলের থাকবেই। এমন একই ধরনের কেইস আমাদের দেশের কাঁঠালের ক্ষেত্রে আমরা চিন্তা করতে পারি। যেমনঃ বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের অন্তর্ভুক্ত গাজীপুরের কাঁঠাল সারাদেশে অনেক বেশি বিখ্যাত, আবার ঠিক পাশেই অবস্থিত ময়মনসিংহ বিভাগের ভালুকার কাঁঠালও বেশ জনপ্রিয়। এখন এই দুই অঞ্চলের কাঁঠালের আলাদা জিআই নিয়ে আমরা ভাবতে পারি কীনা, বৈশিষ্ট্য বিশেষত্ব আলাদা করে দেখানো সম্ভব কীনা, তা নিয়ে রিসার্চ করা দরকার আমাদের।

খাতুনে জান্নাত আশা
This is Khatun-A-Jannat Asha from Mymensingh, Bangladesh. I am entrepreneur and also a media activist. This is my personal blog website. I am an curious woman who always seek for new knowledge & love to spread it through the writing. That’s why I’ve started this blog. I’ll write here sharing about the knowledge I’ve gained in my life. And main focus of my writing is about E-commerce, Business, Education, Research, Literature, My country & its tradition.
https://khjasha.com

Leave a Reply

Top