ব্লকচেইন প্রযুক্তি – Characteristics of Blockchain Technology Blog প্রযুক্তি by খাতুনে জান্নাত আশা - July 25, 2021August 14, 20211 Spread the lovemore Main Characteristics of Blockchain Technology কোনো সমস্যার উদ্ভব মানেই, নতুন কোনো সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন! এভাবেই পৃথিবীতে বহু সমস্যার সৃষ্টির সাথে সাথে একে একে উদ্ভাবিত হচ্ছে শক্তিশালী আর সহজ সব সমাধান।ব্লকচেইন আমার মতে এমনই একটা প্রযুক্তি, যা বর্তমান বিশ্বের ছোট বড় অনেক সমস্যার সমাধানের মাধ্যমে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত করে মানুষের পথচলা অনেকাংশেই সহজ করে দিচ্ছে এবং দিবে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে এর ব্যবহার শুরু হয়েছে বহুদিন থেকেই, তবে আমাদের দেশে এখনো সাধারণ জনগনের মাঝে এই প্রযুক্তি জ্ঞান পৌঁছাতে বহুদেরি, কারন প্রযুক্তি চর্চার অভাব। তবে আমাদের অর্থমন্ত্রী ২০১৮ সালেই ব্লকচেইন প্রযুক্তিকে ই-গভর্নেন্সের আওতায় নিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছেন। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল(BCC) অলরেডি এলআইসিটি(LICT) প্রকল্পের অধীনস্থ ন্যাশনাল ডিজিটাল আর্কিটেকচার(NDA) টীম এটা নিয়ে কাজ করছে এবং একটা নিজস্ব ব্লকচেইন অবকাঠামো তৈরীর জন্য কাজ করছে। বিসিসি সরকারী চাকরির অনলাইন নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করেছে। ব্লকচেইনের কিছু প্রধান বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপঃ DecentralizedDistributedImmutabilityTransparencySecurityTraceabilityLow cost transaction * Decentralized ( বিকেন্দ্রীভূত)– অর্থাৎ এই প্রযুক্তি কোনো নির্দিষ্ট ব্যাক্তি, অথরিটি বা গভর্মেন্টের নিয়ন্ত্রনাধীন নয়, বরং একটা ব্লকচেইন সিস্টেমের অন্তর্ভুক্ত প্রত্যেকের নিজস্ব নিয়ন্ত্রণ রয়েছে পুরো সিস্টেমের উপর। একজন ব্যক্তি একটা ব্লকচেইন সিস্টেমে লগইন করার পর থেকে নিজস্ব গোপনীয় পাসওয়ার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে সেটা কন্ট্রোল করতে পারবে, ব্লকে ক্রিপ্টোকারেন্সি, ইম্পোর্ট্যান্ট ডিজিটাল ডকুমেন্ট সহ যাবতীয় মূল্যবান ডিজিটাল তথ্য এবং সম্পদ সংরক্ষন করতে পারবে। এটার মজার ব্যাপার এটাই যে ৩য় ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাহায্য বা হস্তক্ষেপ দরকার হয় না কোনো। আর কোনো ভুল করার সম্ভাবনাও প্রায় নেই বললেই চলে, কারণ একটা ব্লকে কেউ নতুন তথ্য সংযুক্ত করার পর ব্লকচেইনের সাথে কানেক্টেড প্রত্যেকে সেটার সত্যতা যাচাই করে তারপর সেটাকে সিস্টেমের আওতাভুক্ত করে। আর ব্লকচেইনে থাকা পূর্ববর্তী কোনো তথ্যের সাথে এটা কানেক্টেড হয়ে থাকলে সিস্টেম সেটাকে ক্রসচেক করে নেয়, তাই ব্লকচেইনে থাকা তথ্য নির্ভুল হয়। * Distributed- একটা ডিস্ট্রিবিউটেড চ্যানেলের মাধ্যমে সব তথ্য সংযুক্ত থাকে বলে তথ্য কখনো হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না, আবার চেইনে আবদ্ধ তথ্যগুলো এই সিস্টেমে থাকা ব্যাক্তিদের কাছে গোপনও থাকে না, তাই কেউ তথ্য চুরিও করতে পারেনা। যেমন ধরেন- ৭জন ব্যক্তি মিলে একটা ব্লকচেইন ফ্রেমওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত আছেন। এর মাঝে যে কেউই যখন কোনো নতুন তথ্য বহুল ব্লক চেইনে এড করতে যাবে, তখন চেইনে সংযুক্ত প্রত্যেকটা কম্পিউটারে সেই ব্লকের তথ্য পৌঁছে যাবে, তখন প্রত্যেকে সেটাকে চেক করে দেখবে যে ব্লকে থাকা সব তথ্য ঠিক আছে কিনা, এবং সেটাকে তারা ভ্যারিফাই করে দিবে আর সেই ব্লক চেইনে এড হয়ে যাবে। এই পদ্ধতিতে তথ্য অনেকগুলো কম্পিউটারে থাকায় হারিয়েও যাবেনা, সবাই ভ্যারিফাই করায় তথ্য শতভাগ নির্ভুল থাকে এবং কারো অগোচরে কেউ সেই সব তথ্য চুরিও করতে পারে না।ব্লকচেইনের সাথে কানেক্টেড প্রত্যেকেই সেখানে রাজা, কেউ কারো অধীনস্ত নয়, কারো ক্ষমতা বা এক্সেস পাওয়ার বেশি নয়, সবাই তাই সমান সুবিধা পাবে। * অপরিবর্তনীয়তা (Immutability) – ব্লকচেইন পদ্ধতিতে তথ্য কখনই পরিবর্তন করা সম্ভব না। এখানে কেবল নতুন তথ্য যোগ হতে পারে। মানে আমরা কোনো কিছু টাইপ করে পোস্ট করে ফেললেও যেমন আবার এডিট করতে পারি বার বার, ইচ্ছে হলেই ডিলিট করে দিতে পারি, ব্লকচেইনের ক্ষেত্রে এমন না। আপনি চাইলেই ব্লকচেইনে এড করে ফেলা কোনো তথ্য এডিট বা ডিলিট করতে পারবেন না। তবে প্রশ্ন হচ্ছে একেবারেই কি সম্ভব না তথ্য মুছে ফেলা!হ্যাঁ সম্ভব! তবে এটা এমন একটা দীর্ঘ এবং জটিল প্রক্রিয়া যা অনেক সময় সাপেক্ষ, তাই একে অপরিবর্তনীয়ই ধরা হয়। * অধিকতর স্বচ্ছতা (transparency) – ডিস্ট্রিবিউটেট লেজার পদ্ধতিতে সকল ব্যবহারকারীদের কাছে সমস্ত তথ্য এবং লেনদেনের নিয়ন্ত্রণ থাকে । ব্লকচেইনের তথ্য সকল ব্যবহারকারীদের কাছে সম্পূর্ণ, সঠিক এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে । মানে চেইনে থাকা সবাই সবার তথ্য সম্পর্কে অবগত থাকবে, এখানে কেউ কাউকে ফাঁকি দিবে সেই সুযোগ নেই একেবারেই। কারো অগোচরে ব্লকচেইন থেকে কারো সাধ্য নেই কোনো ডাটা কালেক্ট করার বা মুছে দেয়ার। চেইনের সবার এক্সেস পেলেই কেবল একটা ট্রান্সেকশন সম্পন্ন হতে পারে। * উন্নত নিরাপত্তা (security)– নেটওয়ার্কের মধ্যে প্রতিটি লেনদেন ক্রিপ্টোগ্রাফি (কোড বা সংকেত)ব্যবহার করে যাচাই করা হয়, তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করা যায়। আসলে ব্লকচেইনের সিকুরিটি তত মজবুত হবে এর চেইন বা নেটওয়ার্ক যত বেশি বড় হবে, মানে একটা ব্লকচেইন সিস্টেমে যত বেশি মানুষ লগ ইন করবে এর ডাটাগুলো তত বেশি শক্তিশালী, সিকিউরড আর ভ্যালিড হবে। কারন ব্লকে থাকা তথ্যগুলো চেইনে অন্তর্ভুক্ত প্রত্যেকের কাছে পৌঁছে এবং সেগুলোর ভ্যালিডিটি যাচাই এর পরই সেটা সঠিক বলে সিস্টেমে স্টোর হয়। কেউ যদি চেইনের কোনো ডাটা হ্যাক করতে যায়, তখন সবার কাছে সেটার তথ্য পৌঁছে এবং সবাই সতর্ক হয়ে যায়। একটা ট্রান্সেকশন হতে ব্লকচেইনে ১০মিনিট সময় লাগে, এই ১০ মিনিটে কোনো হ্যাকারের দ্বারাই হাজারটা কম্পিউটার হ্যাক করা সম্ভব হয় না। * উন্নত নিরীক্ষণ সক্ষমতা (traceability) – এ পদ্ধতিতে খুব সহজেই কোন তথ্যের মূল উৎস খুজে বের করা সম্ভব । এজন্য ব্লকচেইন supply chain Management এ অনেক সহায়ক একটি প্রযুক্তি । যেমন ধরেন – Unilever, Walmart, Amazon এরা সারাবিশ্বেই তাদের প্রোডাক্ট সাপ্লাই করছে। এক জায়গা থেকে কাঁচামাল কিনছে, এক জায়গায় উৎপাদন করছে, এক জায়গায় প্রসেসিং প্যাকেজিং করছে, ফাইনালি সারাবিশ্বে ফাইনাল প্রোডাক্ট পৌঁছে দিচ্ছে, তারপর কাস্টমার প্রোডাক্ট পাচ্ছে। এই কোম্পানিগুলোর হেডঅফিস থেকে সম্পূর্ন সাপ্লাই চেইন শতভাগ সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা কিন্তু ম্যানুয়ালি সম্ভব না, কিছু না কিছু ফাঁকফোকর থেকেই যায়, সব রেকর্ড পারফেক্টলি সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। তবে তারা যদি একে ব্লকচেইন প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্ত করে নেয় যেখানে কাঁচামাল সরবরাহ থেকে শুরু করে, উৎপাদক, সাপ্লাইয়ার, রিটেইলার সবাই ব্লকচেইনের অন্তর্ভুক্ত থাকবে এবং সব তথ্য ব্লকচেইনে সংরক্ষন করবে তখন যে যেখানেই থাকুক না কেনো সম্পুর্ন প্রসেসটা সম্পর্কে অবগত থাকবে যে প্রোডাক্ট কখন কোথায় কি অবস্থায় আছে, কার হাতে আছে। প্রোডাক্টের ভ্যালিডিটি আছে কিনা, পুষ্টিমান ঠিক আছে কিনা সব চেক করতে পারবে এক জায়গায় বসেই। * Low cost transaction – ব্লকচেইনের লেনদেনগুলো যেহেতু কোনো ব্যাংক, বা কোনো তৃতীয় পক্ষের সাহায্য ছাড়াই সরাসরি পিয়ার টু পিয়ার হয়ে থাকে তাই এতে বাড়তি চার্জ দরকার হয় না। Like this:Like Loading... Related Spread the lovemoremore