McFarland, USA – A Movie Review & Life Lessons Movie Review মোটিভেশনাল by খাতুনে জান্নাত আশা - October 24, 20212 Spread the lovemoreMcFarland, USA – A Movie Review & Life Lessons এটি এমন একটি স্পোর্টস মুভি, যা হতে পারে মোটিভেশনের অন্যতম সেরা উৎস। ২০১৫ সালে রিলিজপ্রাপ্ত এই মুভির প্লট নেয়া হয়েছে ১৯৮৭ সালের এক সত্য ঘটনা থেকে। কথা না বাড়িয়ে সরাসরি আজ সেই গল্পে চলে যাই। গল্পের শুরু জিম হোয়াইট নামের একজন ফুটবল কোচকে ঘিরে, যিনি প্লেয়ারের বেয়াদবির জন্য রাগের মাথায় এক প্লেয়ারকে আঘাত করায় চাকরিচ্যুত হোন এবং নতুন কোচ হিসেবে McFarland High School এ জয়েন করে পরিবার নিয়ে McFarland শিফট হয়ে যান। McFarland ছিল তখনকার সময় আমেরিকার সবচেয়ে অনুন্নত এবং ছোট একটা গ্রাম, যেখানে থাকার সুযোগ সুবিধা খুব কম ছিল, জীবনযাত্রার মান অনুন্নত ছিল, গ্রামের সব মানুষের জীবন ছিল শতভাগ কৃষি নির্ভর। জিম হোয়াইটের পরিবার বলতে স্ত্রী শেরিল আর দুই মেয়ে। মেয়েদের একেবারেই পছন্দ ছিল না নতুন এই জায়গা। কিন্তু স্ত্রী শেরিল জানত এর থেকে ভালো প্লেসে থাকার সামর্থ্য তাদের নেই এখন, তাই মেয়েদের মানিয়ে নিতে বলল। প্রথমদিনই বাইরে খেতে গিয়ে তারা রাস্তায় কিছু ছেলেদের দেখে ভয় পেয়ে গেল, বাজে ছেলে বলে ধারণা করে নিল। জিম সব সময় তার মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে খুব চিন্তিত ছিল সেই জায়গায়। এদিকে স্কুলের ফুটবল কোচ এবং সায়েন্স টিচার হিসেবে প্রথমে জিম জয়েন করলেও, ফুটবল কোচ হিসেবে সেখানেও সে টিকে থাকতে পারল না আরেকজন কোচের সাথে একজন প্লেয়ার নিয়ে মতের অমিল হওয়ার কারণে। স্কুলের প্রিন্সিপাল তখন শুধু সায়েন্স টিচার হিসেবে তাকে দায়িত্ব পালন করতে বললেন। জিম এতে মোটেই খুশি ছিল না, কারণ কোচ হিসেবে মেন্টরিং করাটাই যেন সব সময় টানত তাকে। আর সেই ভালো লাগা থেকেই সে নতুন সুযোগ নিজের জন্য তৈরী করে নিল। জিম হোয়াইট খেয়াল করল স্কুলের কিছু ছেলে খুব ভালো দৌড়াতে পারে, তাদের মাঝে তাই সে নতুন সম্ভাবনা দেখতে পেল আর নোটিস করতে শুরু করল ছেলেগুলোকে। আর জিম প্রিন্সিপালের কাছে প্রস্তাব নিয়ে গেল যে, এই ছেলেদের নিয়ে সে কান্ট্রি রেসের জন্য টিম তৈরী করতে চায় এবং ক্রস কান্ট্রি চ্যাম্পিয়নশীপে তার এই টিম নিয়ে অংশ নিতে চায়। প্রিন্সিপাল প্রথমে অনুমতি দেয় না, কারণ এর আগে এই স্কুল কখনো ক্রস কান্ট্রি রেসে খেলেনি। কিন্তু জিম প্রিন্সিপালকে কনভিন্স করে অনুমতি আদায় করে নেয়। ছেলেদের মাঝে সবচেয়ে ভালো দৌড়াতেপারত ট্মাস। জিম একটা ছেলেকে দায়িত্ব দিল ট্মাস সহ ৭জনকে কনভিন্স করার জন্য যেন, রেসে অংশ নিতে আগ্রহী হয় এবং নিজেদের প্রস্তুত করতে জিম তাদেরকে ট্রেইন করতে পারে। জিম এবং ওই ছেলে মিলে তখন অনেক ট্রিক্স করে, ওদের বুঝিয়ে নিয়মিত প্র্যাক্টিস করতে রাজি করায়। ছেলেদের প্রত্যেকে খুব স্ট্রাগলের মাঝে বেড়ে উঠেছে, কৃষি নির্ভর পরিবারে প্রতিদিন মাঠে কাজ করে আবার স্কুল করা, তারপর খেলার প্র্যাক্টিস করা তাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল বেশ। খুব ভোরে বাইরে আলো ফোটার পূর্বেই ঘুম থেকে উঠতে হত তাদের আর ফসলের মাঠে যেয়ে কাজ করতে হত, মাঠ থেকে কয়েক মাইল দৌড়ে স্কুল করত তারা, আবার স্কুল থেকে দৌড়ে আবার মাঠে ফিরতে হত। ন্যাচারালি এই দৌড়ে চলার ফলেই তাদের মাঝে দ্রুত দৌড়ানোর দক্ষতা তৈরী হয়েছিল। তবে তারা এতো পরিশ্রান্ত থাকত যে, আবার খেলার জন্য প্র্যাক্টিস করায় তাদের শরীর মন চাইত না, উৎসাহ বোধ করত না। কোচ তাদেরকে বিভিন্নভাবে মনোযোগী করে তুলতে চাইল, হার্ডলি প্র্যাক্টিস করাতে লাগল, যা ছেলেরা মেনে নিতেই পারছিল না কোনোভাবে। এদের মাঝে ট্মাস আবার পারিবারিক সমস্যা নিয়ে খুব ডিস্টার্বড হয়ে থাকত সব সময়, মানসিকভাবে অনেকটা বিপর্যস্ত অবস্থা ছিল। আসলে ম্যাকফারল্যান্ড গ্রামের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে খুব বেশি স্বপ্ন দেখতে পারত না। ছেলেদের লেখাপড়া নিয়েও তাদের মাথা ব্যথা ছিল না। সেই গ্রামের কোনো ছেলেই স্কুলের পাশ করে কলেজ পর্যন্ত যেতে পারত না। কারণ মাঠে কাজ না করলে তাদের পাতে খাবার জুটত না। জীবনটা তাদের ফসলের ক্ষেতেই আটকে থাকত তাই। মা বাবা চাইত না তাদের সন্তানরা পড়াশোনায় সময় দিক, তার থেকে কৃষি কাজে সাহায্য করাকেই বেশি অর্থবহ ভাবত। ছেলেদেরও তাই এর বাইরে গিয়ে কিছু চিন্তা করার সুযোগই হত না, নিজেদের উপর বিশ্বাসই হারিয়ে ফেলেছিল যে, তারা এর বাইরে গিয়ে কিছু করতে পারে, ভাবতে পারে। তাই কান্ট্রি রেস খেলায় অংশগ্রহণ করার ব্যাপারটাও তাদের কাছে অনেকটা ফানি ব্যাপারই ছিল, কোচকে পাত্তাই দিতে চাইত না খুব একটা তাই। কিন্তু কোচ জিম তাদের মনে নতুন স্বপ্নের বীজ বোনে দিতে চেয়েছিল, তারা কলেজে পড়বে, চ্যাম্পিয়নশীপ জিতবে। জিম রানিং টিম নিয়ে এক সময় অন্য লোকাল স্কুলগুলোর সাথে রেস প্রতিযোগীতায় অংশ নিল, আর ৪টা টিমের মাঝে তারা ৪নাম্বার পজিশন পেল , মানে লাস্ট হল। সবাই তাদের নিয়ে হাসছিল সেদিন, ছেলেরা খুব অসহায় ফিল করছিল। জিম তাদেরকে বলল তখন সব দোষ তার, এই হারের জন্য সেই দায়ী, ছেলেরা যেন ভেঙে না পরে। কোচ তার টিমকে নিয়ে এতোই মগ্ন ছিল যে, বড় মেয়ে জুলির ১৫তম জন্মদিনের কথাই ভুলে গেল তার স্ত্রী বার বার মনে করিয়ে দেয়ার পরও। তাই আর মেয়ের কেক কাটা হয়ে উঠেনি, বাবার সাথে বার্থডের ডিনার করা হয় নি। পরিবারের সবাই ওর উপর খুব অসন্তুষ্ট হয়েছিল সেদিন। মেয়ে জুলি দরজা বন্ধ করে খুব কেঁদেছিল সেদিন, সব মিলিয়ে থম্থমে একটা অবস্থা। অসহায় জিম গভীর রাতে গাড়ি নিয়ে সেদিন বেরিয়ে পরে লং ড্রাইভে মন শান্ত করার জন্য। গিয়ে টমাসকে দেখতে পায় খুব রিস্কিভাবে একটা অভারব্রীজের উপর বসে কাঁদছে। জিমের মনে হল, এই বুঝি ট্মাস সুইসাইড করতে নিচ্ছে। সে কাছে গিয়ে কথা বলল। সেদিন ট্মাস সত্যিই বিক্ষিপ্ত ছিল খুব পরিবারের অনাকাঙ্খিত এক ঘটনার জন্য। জিম তার মন খারাপের কথা বলে ওকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করল আর ব্রীজের উপর থেকে টেনে নামিয়ে আনল। এরপর থেকে ট্মাস ধীরে ধীরে কোচকে সম্মান করতে শুরু করল। জিম যখন ছেলেদের দৌড় প্র্যাক্টিসের জন্য পাঠাত, ওরা ঠিকভাবে দৌড়াচ্ছে কিনা সেটা তার জায়গায় থেকে দেখতে পেত না আর ছেলেদের সাথে সাথে এতোটা পথ দৌড়ানোও তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। এটার সুযোগ নিয়ে একটা ছেলে ফাঁকি দিতে চাইত সব সময়। এর সমাধান হিসেবে জিম তার মেয়ের সাইকেল নিয়েই ওদের সাথে প্র্যাক্টিসে অংশ নিল, ছেলেরা এটা দেখে খুব মজা পেল। তবে কোচের সাথে তাদের সম্পর্কের উন্নতি হতে লাগল, কোচের সাথে সহজ একটা সম্পর্ক তৈরী হল তাদের আর অবশেষে কোচ হিসেবে স্বীকৃতিও দিল তারা জিমকে। প্র্যাক্টিসে মনোযোগী হল ছেলেরা, কোচের উৎসাহে তারা তাদের স্বপ্ন খুঁজে পেল। আবারও তারা একটা প্রতিযোগীতায় অংশ নিল লোকাল একটা স্কুলের সাথে। ছেলেদের ভালো ক্যাটসও ছিল না, কোচ জিম নিজের টাকায় তাদের জন্য ক্যাটস কিনে দিল। ছেলেরা ভীষন খুশি হল সেদিন। সেই রেসে তারা জিতে গেল আর আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেল অনেক গুন। এরপর কোচ হঠাত শুনল একি দিয়াজ পরিবারের যে ৩ভাই টিমে খেলছিল, তারা আর খেলবে না। কারণ তাদের বাবা মনে করে খেলার জন্য যে প্র্যাক্টিস টাইম তারা দেয়, এটা সময় নষ্ট ছাড়া কিছু না। সেই সময় মাঠে কাজ করলে তারা অধিক ফসল তুলতে পারবে। কোচ এটা জেনে সরাসরি ওদের বাড়িতে যেয়ে হাজির হল। ছেলেদের মা কোচকে খুব যত্ন করে খাওয়াল, কিন্তু ওদের বাবার থেকে ছেলেদের খেলার অনুমতি আদায় করতে ব্যর্থ হল সে। কোচ কিন্তু এতে হাল ছাড়ল না, পরদিন সে ওদের সাথে মাঠে কাজ করার জন্য হাজির হল যেন, ছেলেদের বাবাকে রাজি করতে পারে। কোচ জিম সেদিন বুঝল, মাঠে তীব্র রোদের মাঝে কাজ করা কতটা কঠিন, ভীষনই হাঁপিয়ে উঠেছিল সে, অসুস্থবোধ করছিল! তবে কোচের এই চেষ্টায়ই ছেলেদের মা-বাবার মন হয়ত নরম হয়েছিল। বাসায় সেদিন ফিরে জিম ক্লান্তিতে অবসন্ন হয়ে সোজা ঘুমিয়ে পরে, আর জেগে দেখে তার বাসায় বিশাল আয়োজন চলছে। ছেলেদের মায়েরা এসেছে, জিমের স্ত্রী শেরিল, মেয়ে জুলি সবাই মিলে রান্নাবান্নার আয়োজন করছে। তারা ট্র্যাডিশনাল একটা খাবার রেডি করছিল, যা সেল করে ছেলেদের খেলার জন্য জার্সির ব্যবস্থা করবে। সেইদিন টা খুব আনন্দ আর উৎসবমুখর কাটে গ্রামবাসীর, ছেলেদের জন্য ম্যাকফারল্যান্ড লেখা জার্সিও তৈরী হয়। জিম তার রেসিং টিমকে নিয়ে একটা স্টেট চ্যাম্পিয়নশীপে অংশ নিল। সেখানে ৪টা দল বাছাই করার কথা ছিল, আর ম্যাকফারল্যান্ড ৪ নাম্বার সেরা টিম হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ভীষন খুশি হয় ছেলেরা, কোচ জিম তাদেরকে পরিশ্রম আর অর্জনের পুরস্কার স্বরূপ বলা যায় সমুদ্র দেখতে নিয়ে যায়। এর আগে এই ছেলেগুলোর কখনো সমুদ্র দেখার সৌভাগ্য হয় নি! একদিন দিয়াজদের মা জানতে পারল জিমের বড় মেয়ে জুলি রিসেন্টলি ১৫ বছরে পদার্পন করেছে, আর মেয়েদের ১৫তম জন্মদিন সেই এলাকার জন্য খুব স্পেশাল, যাকে তারা “quinceañera” বলে থাকে। এইদিন তারা বিশেষভাবে পালন করে। আর তাই সবাই মিলে জিমের সাথে প্ল্যান করে আবার জুলির জন্য সারপ্রাইজ বার্থডে পার্টির আয়োজন করল। সেই দিনটাও দারুণ কাটল সবার, জুলি ভীষন খুশি হল। পার্টি শেষে ওদের ট্র্যাডিশন অনুযায়ী বার্থডে গার্লকে কার প্যারোডিতে নিয়ে যাওয়া হয়, জিম মেয়েকে প্রথমে এতে যেতে দিতে না চাইলেও সবার কথায় রাজি হয়। আর রাস্তায় তারা কিছু বাজে ছেলেদের দ্বারা এটাকড হয়, জুলিকে সবাই মিলে সর্বোচ্চ প্রটেকশন দিয়ে আগলে রাখে, তারপরও জুলি জখম হয় কিছুটা। এই ঘটনায় জিম ভাবে যে, এই বাজে জায়গায় এসে সে তার পরিবারকে খুব বিপদে ফেলেছে। তাই জিম ম্যাকফারল্যান্ড ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তাকে অফার করা অন্য একটা স্কুলে কোচ হিসেবে জয়েন করার চিন্তা করে। কিন্তু জিমের স্ত্রী শেরিল আর মেয়ে জুলি এই জায়গা ছেড়ে কোথাও যেতে চায় না, কারণ তারা এখানে আসার পর সত্যিকারের বন্ধন খুঁজে পেয়েছিল, এতোটা আন্তরিকতা আমেরিকার আর কোথাও খুঁজে পায় নি তারা, এভাবে কেউ আপন করে নেয় নি, ভালো মন্দ সবকিছুতে এগিয়ে আসে নি। সবকিছু ভেবে জিম ম্যাকফারল্যান্ডেই কোচ হিসেবে থেকে গেল আর রেসিং টিমকে নিয়ে ক্রস কান্ট্রি চ্যাম্পিয়নশীপে অংশ নিল। পুরো গ্রামের সবাই গ্যালারিতে গিয়ে হাজির হল ছেলেদের উৎসাহিত করার জন্য। তাদের মা বাবারাও সেখানে উপস্থিত ছিল, যারা চাইত না তাদের ছেলেরা খেলায় অংশ নিক, এলাকার যে শপ ওনার ২৫ বছরের মাঝে একবার তার দোকান বন্ধ করে কোথাও যায় নি, সেও গিয়ে হাজির হল। *** খেলা শুরুর আগে কোচ তাদের এই বলে অনুপ্রাণিত করছিল যে, সবাই তাদের মতই প্লেয়ার, কিন্তু পার্থক্য হল- তাদের কারো ফসলের মাঠে কাজ করার মতো অভিজ্ঞতা নেই। কোচের মতে, মাঠে কাজ করা দুনিয়ার সবথেকে কঠিন কাজ। সেটা করেই যেহেতু অভ্যস্ত ছেলেরা, তাই তাদের দ্বারা অসম্ভব কিছুই নয়। ছেলেরা হতাশ করে নি কাউকে, ক্রস কান্ট্রি চ্যাম্পিয়নশীপ জিতেই ফিরেছে ম্যাকফারল্যান্ডে। কোচ জিম অনেক ভালো অফার পেয়েও এখানেই থেকে গেল, দীর্ঘ ২৩ বছর এই স্কুলেই কোচ হিসেবে ছিলেন তিনি এবং তার কোচিং এ টানা অনেকগুলো চ্যাম্পিয়নশীপ জিতেছে এই স্কুল। প্রথম চ্যাম্পিয়ন শীপ জেতা টিমের ৭জনই কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছিল এবং তাদের পরিবার আত্মীয়স্বজনদের মাঝে প্রথম তারাই কলেজ পর্যন্ত পড়তে যেতে পেরেছিল। প্রত্যেকেই নিজ নিজ ক্যারিয়ার লাইফে সফল হয়েছিল। ** তবে কিছু লক্ষ্যনীয় ব্যাপারকে বিশেষভাবে ফোকাস না করে পারছি না। রেইসের শুরুতেই একজন প্লেয়ার জোসি খুব দ্রুত দৌড়াতে শুরু করেছিল, যা ছিল ওর মারাত্মক ভুল, ট্মাস এবং কোচ বার বার ওকে সাবধান করছিল আস্তে দৌড়াবার জন্য। কারণ শুরুতেই বেশি স্পিড আস্তে আস্তে কাহিল করে দেয়। তাই হল, এক সময় জোসি তার সব এনার্জী হারিয়ে ফেলল আর দৌড় থেকে ছিটকে পরল। সবাই তখন হতাশ হয়েছিল, কারণ ওকে নিয়ে সবাই আশা করেছিল ভালো করবে। ওর অবস্থা দেখে ওরা হেরেই যাবে ভাবছিল, কারণ একে কভার দেয়ার মত কেউ ছিল না। কিন্তু যাকে নিয়ে কোনো আশাই করতে পারে নি, সেই তিন ভাই এর মাঝে সবচেয়ে স্বাস্থ্যবান ভাই যে কিনা দৌড়ে সব সময় সবার পেছনেই পরে থাকত। সেই ছেলেটাই প্রথমদিকে স্লো থেকে শেষদিকে নিজের সর্বোচ্চ শক্তির ব্যবহার করে দলকে জিতিয়ে দিতে ভূমিকা রেখেছিল। আমাদের ক্ষেত্রে এই উদাহরণ খুব কার্যকরী। গ্রুপগুলোতে, স্যারের প্লাটফর্মগুলোতে কিছু মানুষ প্রথম থেকেই এতো বেশি এক্টিভ থাকে যে অবাক হতে হয়। কিন্তু তাদের বেশির ভাগই খুব দ্রুত আবার আগ্রহও হারিয়ে ফেলে, কিছুদিন পর আর খুঁজেই পাওয়া যায় না। তাই শুধু রেস না , জীবনের সবক্ষেত্রেই ব্যালেন্স করে চলতে শেখাটা জরুরী। শুরুতেই অভার এক্সাইটেড না হয়ে বরং ধীরে ধীরে এডজাস্ট করতে হবে পরিবেশ, পরিস্থিতি আর প্রয়োজনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে। ** কোচ জিম সব সময় একটা পূর্ণাঙ্গ টিম হিসেবে খেলতে উৎসাহিত করেছেন, টিমের প্রত্যেককে একে অপরের প্রতি আস্থা রাখতে বলেছেন। এটা সব জায়গায়ই গুরুত্বপূর্ণ। একা একজন প্রচন্ড শক্তিশালী ব্যাক্তির চেয়ে এভারেজ কয়েকজনের মিলিত শক্তি বেশি কার্যকরী। ** কোচ জিম কখনো হাল ছাড়ে নি, প্রত্যেকটা সিচুয়েশন ঠান্ডা মাথায়ই হ্যান্ডেল করেছে। শিক্ষার্থীরা হাল ছেড়ে দিলেও কোচ লেগে ছিল ওদের পেছনে, শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন সম্ভাবনা সবকিছুকে বের করে এনেছে তার একাগ্রতা, পরিবর্তন আনার প্রচন্ড ইচ্ছা আর বন্ধুসুল্ভ আন্তরিক আচরণের মাধ্যমে এবং শিক্ষার্থীদের কাছে সেরা কোচ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, তাদের শ্রদ্ধা ভালোবাসা অর্জন করে নিয়েছে। আর কোচ মানেই তাদের মাঝে আমি স্যারকে দেখি। এ পর্যন্ত যতগুলো মুভি দেখেছি সবগুলোর প্রধান চরিত্র আর কোচদের সমন্বিত রূপ মনে হয়েছে স্যারকে। স্যারের মাঝে তাদের প্রত্যেকটা ভালো গুনের প্রকাশ আমি পেয়েছি। ** যে কোনো জায়গা থেকেই আসলে সেরা হওয়ার সুযোগ রয়েছে, যদি মানুষ স্বপ্ন দেখে আর সেই অনুযায়ী কাজ করে। আমেরিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাথে আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলের পার্থক্য পাই নি। সেখানের মা-বাবা আর ছেলেদের স্ট্রাগল, স্বপ্নহীন মানুষদের সেরা হওয়া এইসবই আমাদের দেশেও দেখা যায়। খেয়াল করলেই দেখতে পাবেন দেশের প্রায় সব সেক্টরের নেতৃস্থানীয় উচ্চ পর্যায়ে আসীন ব্যাক্তিবর্গের অধিকাংশেরই ঠিকানা ছিল এমন সুবিধাবঞ্চিত গ্রাম, সাধারণ কৃষক পরিবার থেকে এসেই তারা আজ সর্বোচ্চ মর্যাদায় আসীন। তাই আমার জন্ম কোথায় সেটা ম্যাটার করে না, যদি ইচ্ছাশক্তি, স্বপ্ন আর চেষ্টা থাকে সেই স্থান পরিবর্তনের জন্য। Like this:Like Loading... Related Spread the lovemoremore
বরাবরের মতো খুব সুন্দর রিভিউ। পড়লে মনে হয় বাস্তবে দেখছি এবং তাদের চরিত্রে মিশে আছি। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু ❤️ Reply