You are here
Home > Basic Knowledge > স্টোরি টেলিং- Story Telling (আমার গল্প)

স্টোরি টেলিং- Story Telling (আমার গল্প)

Spread the love

একজন মেহেদী আর্টিস্টের গল্প

(এই স্টোরি টেলিং টা করেছিলাম আসলে, আমি যখন পুরোদস্তুর একজন মেহেদী আর্টিস্ট বলে পরিচিত ছিলাম আমার শহরে। প্রায় দু’বছর কাজ করার পর হঠাৎ কোভিড এসে আমার প্রিয় কাজের সুযোগটা কেড়ে নিল।

ময়মনসিংহ শহরে আমিই ছিলাম তখন প্রথম মেহেদী আর্টিস্ট। এখন অনেকে এই পেশায় এসেছে এবং খুব ভালো কাজ করছে। কিন্তু আমি প্রায় এই সার্ভিস দেয়া বন্ধই করে দিয়েছি বলা যায়! লাস্ট কবে প্রোফেশনাল আর্ট করেছিলাম মনে পরছে না। নিজের কাজগুলো দেখে নস্টালজিক হয়ে পরি বার বার। কারণ মেহেদী আর্ট খুব প্রিয় একটা কাজ আমার। 😊)

ছবিতে আমার সেদিনের করা মেহেদী ডিজাইন

আমি আশা, এমন একটা সেবা নিয়েই আমি কাজ করছি যা পুরোটাই আবেগ তাড়িত, আমার মতে এতে কোন যুক্তি দেয়া অমূলক।

আমি মেহেদী আর্টিস্ট হিসেবে কাজ শুরু করার পর থেকে যতগুলো ক্লায়েন্ট হেন্ডেল করেছি প্রত্যেকের সাথেই আমার এই মেহেদী নিয়ে আবেগ জড়ানো গল্প আছে।

এটা ছিল আমার দ্বিতীয় কাজ ছিল।

দেখা হয়েছিল এক প্রানচঞ্চলা মেহেদীপ্রেমী তরুনীর সাথে।

আমার বান্ধবী যখন আমাকে নক দিয়ে বলল ওর পরিচিত এক আপু আমার কাছে মেহেদী পরতে চায় উনার প্রথম বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষে। আমি তো বিশাল খুশি কারণ সবে মাত্র কাজ শুরু করেছি তখন একটা বুকিং পাওয়া মানে বিরাট ব্যাপার।

যাই হোক, আপুর সাথে কথা হল। উনি প্রায় এক মাস আগে আমাকে বুকিং দেন, আর আমার তো এদিকে অপেক্ষায় সময় যাচ্ছিলোই না। নেটে বিভিন্ন ডিজাইন দেখছিলাম আর প্রেক্টিস করছিলাম, টার্গেট ছিল আপুকে প্রথম কাজের মাধ্যমেই মুগ্ধ করে দেয়া।

আপু বুকিং দেয়ার সময় বলেছিলেন উনার বাজেট ৭০০, এর মধ্যে আমি যা ডিজাইন করে দিতে পারি। কিন্তু আমার মাথায় তখন টাকার ধান্দার চেয়ে বেশি ছিল আপুকে খুশি করা যেন উনার কাছ থেকে রিভিউ পেয়ে আরও ক্লায়েন্ট আকৃষ্ট হয়।


অবশেষে কাঙ্ক্ষিত সেই দিন এলো। আপু খুব পর্দানশীল মানুষ, বাসা আর অফিস ছাড়া অন্য কোথাও যেতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন না, তাই আমিই আপুর বাসায় গেলাম। এর মধ্যে আবার সমস্যা হলো আপুর জবের কারণে শুক্রবার ছাড়া উনার সময় নেই, আর আমার হচ্ছে শুক্রবার এমবিএর ক্লাস!! ‍


কি করি!! কি করি!!

কাজের ব্যাপারে নো কম্প্রোমাইজ, যেভাবেই হোক ম্যানেজ করতে হবে। আমার ক্লাসের ফাঁকে ২ ঘন্টার মতো জুমার নামাজের ব্রেক থাকে ভাবলাম যে করেই হোক এই সময় কে কাজে লাগিয়ে কাজটা সফলভাবে শেষ করতে হবে।


যেই ভাবা, সেই কাজ। ক্লাসের ফাঁকেই আল্লাহর নাম নিয়ে চলে গেলাম আপুর বাসায়।


প্রথম দেখা, প্রথম কথাতেই প্রেমে পরার একটা ব্যাপার আছে না, আপুকে দেখার পর আমার সেটাই হলো!!!  

আপু এমনভাবে কথা বলছিলেন মনে হচ্ছিল যেন কত বছরের চেনা। এ

তোটা চটপটে, স্মার্ট, সুন্দর একটা মেয়ে আপু, মাশাআল্লাহ কতো সুন্দর পরিপূর্ণ পর্দা করে থাকে, এই ব্যাপারটাই আমাকে বেশি মুগ্ধ করে দিল। আপুকে মুগ্ধ করতে গিয়ে এদিকে আমি নিজেই মুগ্ধ হয়ে বসে আছি।‍‍

যাক গে, বিসমিল্লাহ বলে শুরু করলাম মেহেদী দেয়া। আপু সারাক্ষণ হাসছে আর গল্প করছে। কথা বললে ডিজাইন করতে অসুবিধা হয় খুব, তারপরও আমি আপুকে কিছু বলতে পারছিলাম না,কারণ উনার কথা শুনতেই আমার ভালো লাগছিল।

উনার বিয়েতে উনি মন ভরে মেহেদী পরতে পারেন নি,খুব আক্ষেপ করলেন তখন কেন আমাকে পেলেন না। আমাকে কি পরিমাণ উৎসাহ যে উনি দিয়েছেন তা এইভাবে লিখে প্রকাশ করা যাবে না। আপু মন ভরে মেহেদী দিতে পেরে যে কতটা খুশি সেদিন হয়েছিলেন সেই হাসি এখনও আমার চোখে লেগে আছে।

এর মাঝেই দুপুরে জোর করে খাওয়ালেন, অনেক খাওয়ালেন যে আপ্যায়নের কথাও আমি ভুলতে পারিনা।

আপুকে আমি সেই বুকিং এ বলা ৭০০টাকার চিন্তা করে মেহেদী দিয়ে দেইনি। আমার মনের মাধুরি মিশিয়েই ডিজাইন করেছিলাম।

তাই বিদায় বেলায় আপু আমাকে ৭০০ টাকা দিতে লজ্জা পাচ্ছিলেন বোধহয়, তাই জোড় করে আমাকে কিছু টাকা বাড়িয়ে দিয়ে বললেন,

“তোমাকে তোমার প্রাপ্য টাকাটা দিতে পারছি না আজ, এটা রাখো। আর তোমাকে একটা উপদেশ দেই, তোমার কাজ অনেক বেশি সুন্দর যার তুলনায় তুমি অনেক কম টাকা নিচ্ছ।

প্রত্যেকটা প্যাকেজের প্রাইজ তুমি আমার কথা রেখে আজই বাড়িয়ে দাও, তাহলে তোমার কাজের স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেইন হবে। আর আমি ভবিষ্যতে ইনশাআল্লাহ ওই টাকা দিয়েই তোমার কাছে মেহেদী পরব”।

আমিতো আপুর কথা শুনে থ..!!! বলে কি মেয়ে ক্লায়েন্ট হয়ে আমাকে আমার প্যাকেজ প্রাইজ বাড়াতে বলছে?!!!!!

এখানেই শেষ করছি আমার ফুল অফ ইমোশনাল লাভ স্টোরি উইথ মাই ক্লায়েন্ট।

এখানে শিক্ষনীয় এবং লক্ষনীয় কিছু ব্যাপার আছে, যা আমি আপনাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানতে চাই আর আমার স্টোরি কতটা আপনাদের মনে কোন দাগ কাটতে পেরেছে কিনা তা জানতে চাই।

আর ছবিতে আমার সেই কাজের ছবিগুলোই সংযোজন করে দিয়েছি।


Spread the love
খাতুনে জান্নাত আশা
This is Khatun-A-Jannat Asha from Mymensingh, Bangladesh. I am entrepreneur and also a media activist. This is my personal blog website. I am an curious woman who always seek for new knowledge & love to spread it through the writing. That’s why I’ve started this blog. I’ll write here sharing about the knowledge I’ve gained in my life. And main focus of my writing is about E-commerce, Business, Education, Research, Literature, My country & its tradition.
https://khjasha.com

2 thoughts on “স্টোরি টেলিং- Story Telling (আমার গল্প)

  1. চমৎকার স্টোরি টেলিং হয়েছে আপু।
    অনেক অনেক শুভকামনা রইলো 💖

Leave a Reply

Top
%d bloggers like this: