ইকোনমিক বাবল (Economic Bubble) কি? কারণ ও প্রকারভেদ World Economy by খাতুনে জান্নাত আশা - August 9, 2021September 8, 20210 Spread the lovemore Economic Bubble/ইকোনমিক বাবল ** ইকোনমিক বাবল (Economic Bubble) কি? Economic Bubble ইকোনমিক সাইকেলেরই একটা অংশ। তবে এই টার্মটা নিয়ে Economist রাই একমত হতে পারে না। কারণ Economic Bubble কেন কিভাবে শুরু হয়ে যায়, এটা যেমন আগে থেকে Measure করা যায় না। তেমনিভাবে একটা শুরু হয়ে গেলে সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। আর প্রত্যেকটা Economic Bubble এর সৃষ্টি হওয়ার পর সেটা নিয়ে প্রতিনিয়ত গবেষণা আর তর্ক বিতর্ক চলতেই থাকে। ** এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হল- কোনো সম্পদের দাম দ্রুত বাড়তে থাকে এবং এর Intrinsic/fundamental value থেকে অনেক গুন বেড়ে যায়। সেই সম্পদ হতে পারে জমি বা বাড়ি, স্বর্ণ, স্টক, ক্রিপ্টোকারেন্সি, নতুন কোনো প্রযুক্তি বা যে কোনো সম্পদ। আমরা সাধারণত জানি যে, কোনো জিনিসের দাম এর ডিমান্ড সাপ্লাই এর উপর ভিত্তি করে বাড়ে। তবে এক্ষেত্রে ডিমান্ড সাপ্লাই এর খুব একটা ভূমিকা থাকে না। বরং একে বলা যায়, মানুষ ট্রেন্ড মনে করে রিস্ক নেয়, অনেকটা অনুমানের উপর নির্ভর করে ইনভেস্ট করে বলা যায়। ইনভেস্টরদের ধারণা থাকে এমন যে, দাম তো এখন প্রতিদিন বাড়ছেই শুধু। তাই আজকে কিনে রাখলে আগামীকাল বেশি দামে বিক্রি করে দিব। এমনটা ভেবে রাতারাতি কোটি কোটি মানুষ হয়ত কয়েক হাজার মিলিয়ন বিলিয়ন টাকা ইনভেস্ট করে ফেলে। সবাই যখন একসাথে ইনভেস্ট করে ফেলে, তখন দামও তেমন বেড়ে যায় কয়েকশ গুন। এমন একটা পর্যায়ে যায় যে, এতো উচ্চ দামে সেই সম্পদগুলো Repurchase করার মতো কোনো ইনভেস্টর আগ্রহী হয়ে আর আসে না। ঠিক এই অবস্থায়, সম্পদের দাম যেমন আকাশচুম্বি বেড়েছিল ; তেমনি আবার রাতারাতি তলানিতে নেমে যায়। এই অবস্থাকেই তখন বলা হয় Economic Bubble। এটা এমন এক মিরাকল যে, কখন আসে বোঝার উপায় নাই। আর যখন সবাই বুঝতে পারে, তখন ঠেকানোর উপায় থাকে না। বুঝতে পারেই আসলে একদম ইকোনমির বারোটা বেজে যাওয়ার পর। ** Why Causes ইকোনমিক বাবল (Economic Bubble)? এই টার্মকে ঘিরে অনেক থিউরি এ পর্যন্ত আসলেও, কোনো ইকোনমিস্ট এখন পর্যন্ত একে নিয়ন্ত্রনের এক্সাক্ট থিউরি ব্যাখ্যা করে উঠতে পারেন নি। তবে মোস্ট কমন কিছু কারণের মাঝে বলা হয়- Asset Bubble এর জন্য মূল কারণ হিসেবে কাজ করে Low-interest rate loan. কম সুদে লোন পেয়ে মানুষ তখন সেটাকে ইনভেস্ট করতে শুরু করে, আর সম্পদের দাম এভাবে দ্রুত বাড়তে থাকে। আরেকটা কারণ হল- নতুন কিছু, লিমিটেড এডিশনের কিছু বা ইনোভেটিভ কিছুর প্রতি মানুষের আকর্ষন খুব বেশি থাকে। যেমন ধরেন, এ্যাপলের নিউ আইফোন আসছে বাজারে, স্টক আউট হয়ে যাওয়ার আগেই আমাকে কিনতে হবে। আবার ফিনান্সিয়াল মার্কেটে কোনো কোম্পানির শেয়ার প্রাইস সামনে বাড়তে পারে শুনেই, সেই কোম্পানির শেয়ার শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই কিনে ফেলতে হবে। এই যে, ক্রেজটা তৈরী হয় মানুষের মাঝে। এটাই যে কখন Economic Bubble/ইকোনমিক বাবল সৃষ্টি করে ফেলে বোঝাই দায় হয়ে যায়। এক্ষেত্রে ব্যাপারটা যতটা না ইকোনোমিকাল, তার থেকেও বেশি সাইকোলজিকাল। মানুষের যেসব চিন্তাধারা এর পেছনে কাজ করে বলছি- 1) Herding: মানুষ সব সময় সেদিকেই যায়, যেদিকে বেশি মানুষকে যেতে দেখে। আমার ক্ষেত্রে যেমন হয়, কোনো নতুন জায়গায় গিয়ে যদি কোনো হোটেল বা রেস্টুরেন্টে খাওয়ার দরকার হয়। তখন আমি সেটার খাবারের মান বাইরে থেকে দেখে বোঝার চেষ্টা করি। যে হোটেলে মানুষ বেশি দেখি, মনে হয় সেটার খাবার অবশ্যই ভালো হবে হয়ত। এক্ষেত্রেও তেমন চিন্তা কাজ করে। যেহেতু সবাই এই কোম্পানির স্টকে ইনভেস্ট করছে, তাহলে আমিও করব। এতো মানুষ কখনো ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারে না! 2) Cognitive Dissonance: হতাশাগ্রস্ত মানুষ যখন হঠাৎ কোনো আশার আলো দেখতে পায়, তখন সেটাকে আর হাতছাড়া করতে চায় না। এটা ধরা যাক, মধ্যবিত্তদের জীবনের গল্পের মত। অনেক চ্যালেঞ্জিং জীবনের পাড়ি দিয়ে শেষ বয়সে যখন পেনশনের একটা বড় অংকের টাকা হাতে আসে। তখন সেটাকে ঘিরেই অনেক স্বপ্ন বোনা হয়ে যায়। সেই টাকা থাকা অবস্থায় যদি হঠাৎ কোনো ইনভেস্টমেন্ট সুযোগের কথা জানতে পারে। যেখানে ইনভেস্ট করলে, অনেক গুন বেশি হয়ে ফিরে আসবে টাকা। তখন শেষ আশা ভরসা পুঁজি করে ইনভেস্ট করে ফেলে হয়ত। 3) Short-termism: কিছু মানুষ আছে কোনো পরিশ্রম ছাড়া, অপেক্ষা করা ছাড়া, খুব দ্রুত বড়লোক হতে চায়। অল্পদিনের মাঝে ঘরে বসে ইনভেস্ট করলেই টাকা কয়েকগুন হয়ে ফিরে আসবে। এই লোভের বশবর্তী হয়েই বিপুল পরিমান অর্থ ইনভেস্ট করে দেয়। এরাই Speculative Investor, সব সময় হাই রিস্কি খাতে ইনভেস্ট করে কম সময়ে বেশি রিটার্ন পাওয়ার আশায়। ** Different Types of Economic Bubble (ইকোনমিক বাবল)? প্রধানত চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে একে- • Credit Bubble ব্যাংক যখন সব লোনের উপর ইন্টারেস্ট রেইট কমিয়ে দেয় এবং লোন নেয়া সবার জন্য ফ্লেক্সিবল করে দেয়, তখন ক্রেডিট বাবল হতে পারে। • Stock Market Bubble ফিনান্সিয়াল মার্কেটে কোম্পানির স্টক প্রাইস এর মূল দাম থেকে অনেক বেশি বেড়ে গেলে Stock Market Bubble হতে পারে। • Commodity Bubble যে কোনো বিজনেস প্রোডাক্টের প্রাইস বেড়ে গেলেই এটা হতে পারে। তবে মূলত স্বর্ণ, তেল, শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত ধাতব দ্রব্য বা কৃষিতে উৎপন্ন শস্য ইত্যাদির দাম বৃদ্ধিতে এই Bubble সৃষ্টি হতে পারে। • Market Bubble মার্কেট বাবলের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান উদাহরণ, হাউসিং বা রিয়েল এস্টেট বাবল। তবে Market Bubble বিভিন্ন কারেন্সির প্রাইস বাড়তে থাকলেও হতে পারে। যেমন, সারা বিশ্বের বেইস কারেন্সি হল ডলার, ইউরো ইত্যাদি। এগুলোর দাম হঠাৎ অনেক বেড়ে গেলে বাবল সৃষ্টি হতে পারে। আর এখন সবচেয়ে বেশি যে সম্ভাবনা রয়েছে যে বাবল সৃষ্টির সেটা হলো- Cryptocurrency Bubble. এটা মার্কেট বাবলেরই পার্ট। যে হারে এখন ক্রিপ্টোকারেন্সির (Bitcoin, Litecoin ইত্যাদি) দাম উঠানামা করছে। আর এর চাহিদা বাড়ছে। ধারণা করা হচ্ছে, নেক্সট ইকোনমিক বাবল এই ক্রিপ্টোকারেন্সিকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হতে পারে। এই পোস্ট আর বড় না করি। মাথায় জ্যাম লেগে গিয়েছে। বিশ্বে এ পর্যন্ত অনেকগুলো ইকোনমিক বাবল সৃষ্টি হয়েছে। বেশ ইন্টারেস্টিং লাগল পড়ে। পরবর্তী তে চেষ্টা করব সেগুলো নিয়ে লেখার। তবে আপাতত আগামী কয়েকদিন আর এটা নিয়ে পড়ালেখার চিন্তা করছি না। Like this:Like Loading... Related Spread the lovemoremore