Edtech Start-up of Bangladesh “Shikho” raises $1.3m Seed Fund প্রযুক্তি বিজনেস সংবাদ by খাতুনে জান্নাত আশা - July 31, 2021July 31, 20210 Spread the lovemore Shikho, an education technology company of Bangladesh. বার্গার খাওয়ার টাকায় শিক্ষা!এমন সুযোগ ব্যায়ের কথাই বলছে “শিখো” নামের অনলাইন এডুকেশন প্লাটফর্মটি। তারা শিক্ষার্থীদের মা-বা কে এই প্রশ্নটাই করতে চাচ্ছে, এই টাকায় আপনি বাচ্চাকে বার্গার কিনে খাওয়াবেন নাকি কোয়ালিটি এডুকেশনের সুযোগ তৈরি করে দিবেন!দারুন লাগল আমার কাছে এই স্ট্রাটেজি এবং সুযোগ ব্যায়ের মেসেজটা। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের উপর ফোকাস করে তৈরি “শিখো” নামের একটা এডটেক কোম্পানি ১.৩ মিলিয়ন ডলার সীড ফান্ড পেয়েছে সিলিকন ভ্যালির লিনস্টার্ট এবং নিউইয়র্ক বেইসড এংকরলেস বাংলাদেশ নামের আর্লি স্টেজ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম থেকে। লিনস্টার্ট স্পেশালি এডটেক কোম্পানিগুলোতে ইনভেস্ট করে থাকে। এর আগেও লিনস্টার্ট ২ লক্ষ পচাত্তর হাজার মার্কিন ডলার দিয়েছিল এই কোম্পানিকে প্রি-সীড ফান্ডিং হিসেবে। “শিখো” ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠা করে হয়েছে ট্র্যাডিশনাল বাংলাদেশী জাতীয় শিক্ষা কারিকুলাম কে আধুনিকীকরণের উদ্দেশ্য নিয়ে, তারা একটা ডিজিটাল লার্নিং ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে চেয়েছিল, যা শিক্ষার্থীদের পাঠদান আনন্দময় করে তুলবে, পাঠ্যবই এর প্রত্যেকটা চ্যাপ্টার ভালো করে বুঝতে পারবে, একদম বেসিক থেকে ক্রিটিকাল এনালাইসিস পর্যন্ত বোঝানোর সিস্টেম তৈরী করবে যেখানে দুর্বল শিক্ষার্থী থেকে এডভান্স লেভেলের শিক্ষার্থীরাও সমান উপকৃত হবে। শিক্ষার্থীদের টেস্টের ব্যবস্থাও থাকছে এতে, যা দ্বারা লেভেল অনুযায়ী স্কোরিং করার সিস্টেম রয়েছে, অনেকটা গেমিং ইন্টারফেসের মতো পয়েন্টস, লেডারবোর্ড আর ভার্চুয়াল এওয়ার্ডের সুযোগ রয়েছে যা শিক্ষার্থীদের স্টাডিতে আরো আগ্রহী করে তুলছে। প্রাথমিকভাবে তারা ৯,১০,১১,১২ ক্লাসের জন্যই তাদের লার্নিং বেইস তৈরী করেছে এবং পরবর্তীতে ভার্সিটি লেভেলের লেসনও এড করার প্ল্যান করছে তারা। শিখোর সিইও শিশির চৌধুরী পূর্বে ফিনান্স & বিজনেস সেক্টরে কাজ করত এবং HSBC ব্যাংকে ডিরেক্টর হিসেবেও ছিল। আর এর চিফ অপারেটিং অফিসার জিসান জাকারিয়া গণিতের শিক্ষক এবং পূর্বে ফিনান্স নিয়েও কাজ করতেন। শিশির চৌধুরীর ইচ্ছা ছিল বিজনেসে এমন কিছু ইনোভেশন আনা যা সমাযে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।যেহেতু তিনি ফিনান্স নিয়ে কাজ করতেন, তাই প্রথমে ফিনটেক নিয়ে কাজ করার কথা ভেবেছিলেন, কিন্তু দেখলেন আমাদের দেশে বিকাশ সহ আরো বেশ বড় বড় কম্পিটিটর এই সেক্টরে রয়েছে, তাই তিনি সেটা বাদ দিয়ে এডুকেশন সেক্টরের সম্ভাবনার কথা ভাবলেন। শিশিরের মা বা দুজনই টিচিং প্রফেশনের হওয়ায় এবং কাকতালীয়ভাবে চীন এবং ইন্ডিয়ার Byju’s আর Toppr এর মতো এডটেক স্টার্ট আপ কোম্পানির ক্লায়েন্ট রিপোর্ট তার হ্যান্ডেল করার সু্যোগ হওয়ায় তার মাথায় এলো, বাংলাদেশে কেনো এমন এডটেক ফার্ম নেই! বাংলাদেশে এই সেক্টরে কাজ করার সম্ভাবনা মার্কেট এনালাইসিস করে বিপুল সম্ভাবনা দেখতে পেলেন তিনি। ১৬৫ মিলিয়নের বিশাল জনসংখ্যা এবং এর প্রায় অর্ধেকেরই বয়স ২৫ বছরের নীচে! আর ১১.৭ কোটি মোবাইলে ইউজারদের ৪০% এরই স্মার্ট ফোন রয়েছে, বাংলাদেশে ৪৫ লাখেরও বেশি মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক স্টুডেন্ট রয়েছে,যাদের সবাই শিখোর সম্ভাব্য ক্লায়েন্ট। এই বিশাল জনগোষ্ঠীকেই তারা টার্গেট মার্কেট ধরে চিন্তা করলেন এই স্টার্ট আপের। জাকারিয়া বলছিলেন, বাংলাদেশের পুরোনো শিক্ষা ব্যবস্থায় খুব বেশি পরিবর্তন হয় নি। তারা পলিটিশিয়ান না তাই সিস্টেম বদলে দেয়ার সাধ্য নেই, তবে তারা চাইলে পরিবর্তন আনতে পারে নিজেদের চেষ্টায়। তারা তাই এমন কিছু পরিবর্তন এই শিক্ষাক্ষেত্রে আনতে চেয়েছিল, যা এর আগে কেউ কখনো দেখেনি। শিখোর যাত্রা শুরু হয়েছিল ঠিক কোভিড আক্রমণের আগে আগে, যেহেতু এটা পুরোপুরি একটা অনলাইন বেইসড কোম্পানি, তাই তাদের কার্যক্রমে কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি। আর প্রায় দুই বছর ধরে চলা কোভিড পেনডেমিক আইটি স্টার্ট আপগুলোর সম্ভাবনা অনেক বেশি বাড়িয়ে দিয়েছে এবং অনলাইন শিক্ষায় শিক্ষার্থীদেরকে অভ্যস্ত করে ফেলেছে। শিখোর জন্য তাই এটা বিশাল সুযোগ। দক্ষ শিক্ষকদের দিয়ে প্রত্যেকটা বিষয়ের উপর বিভিন্ন ভিডিও এবং এনিমেটেড কন্টেন্ট ক্রিয়েট করে শিখো এপ্সের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদেরকে সর্বোচ্চ দক্ষতা বৃদ্ধির চেষ্টা করছে তারা। এতোদিন শুধু রেকর্ডেড ভিডিও দেয়া থাকলেও এখন লাইভ ক্লাসের সুযোগ তৈরী করছে তারা৷ শিশির চৌধুরী বলছিলেন, অনলাইন লার্নিং প্লাটফর্মের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং বিষয় হলো দীর্ঘ সময় শিক্ষার্থীদেরকে মোটিভেটেড রাখা। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতেই তারা নাইক রান ক্লাব এপ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে গেমিফিকেশন সিস্টেম তাদের এপে এড করেছে। এপে লগ ইন থেকে শুরু করে, লেকচার ভিডিও দেখা, টেস্ট দেয়া যার স্পিড এবং একুরেসির উপরও আছে পয়েন্ট, স্টেপ বাই স্টেপ স্টাডি করার সাথে পয়েন্ট বাড়তে থাকে, টার্গেটেড লক্ষ্য অর্জনে “লিজেন্ড” ব্যাজ সহ স্পেশাল ব্যাজগুলো পাওয়ার জন্য তখন স্টাডিতে আরো আগ্রহী হয় এবং তার সহপাঠি আর এপ ইউজারদের সাথে কম্পিট করে এগিয়ে থাকার একটা প্রবণতাও কাজ করে। শিখো এপ সাত দিনের জন্য ফ্রী ইউজ করা যায়। তবে কোম্পানি নিউ ফান্ডিং পাওয়ায় আরো বেশি ফ্রী কন্টেন্ট প্রোভাইড করার কথা ভাবছে। সিইও জানান, পেইড ইউজারদের এনগেইজমেন্ট রেইট অনেক বেশি, প্রতিদিন গড়ে ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট সময় তারা এপে ব্যয় করছে। শিখো তাদের ইউজার দ্বিগুন বৃদ্ধির প্ল্যান করছে স্কুলগুলোর সামনে অফলাইন সেলস টিম এড করার মাধ্যমে প্রচার করে, মূলত শিক্ষার্থীদের মা বাবাকে সচেতন করা এবং আকৃষ্ট করাই তাদের উদ্দেশ্য। কারণ শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র ইউজার, আর তাদের মা-বাবারাই শিখোর একচুয়াল ক্লায়েন্ট। ইনভেস্টর ফার্ম এংকরলেস বাংলাদেশের সিইও রাহাত আহমেদ বলেন, প্রাইভেট সেক্টরে শিক্ষার পেছনে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ খরচ করে থাকে, কিন্তু ইন্ডিয়া ইন্দোনেশিয়ার মতো এটি এখনো এডটেক ফান্ডিং এর ক্ষেত্রে অনেক বেশি পিছিয়ে আছে। তার বিশ্বাস শিখো এই গ্যাপ ফিলাপ করতে একদম উপযোগী একটা কোম্পানী, যা এদেশের শিক্ষা খাতকে নতুন মাত্রা দিবে, পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে। গুগল প্লে স্টোর থেকে দেখলাম অলরেডি শিখো এপ ৫০ হাজারেরও বেশি ডাউনলোড হয়েছে। আশা করা যায়, বাংলাদেশের ই-লার্নিং সেক্টরে এই এপ এবং কোম্পানি দারুণ ভূমিকা রাখবে। আমরা যে “সবার জন্য শিক্ষা” স্লোগানটা ব্যবহার করি এর কার্যকারিতা শতভাগ স্বার্থক করা সম্ভব আসলে ই-লার্নিং বেইসড শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে। কারণ ই-লার্নিং কম খরচে সবচেয়ে বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া যায়, আর আমাদের দেশে এখন প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও ইন্টারনেট এবং স্মার্ট ডিভাইস এভেইলেবল আছে, তাই ট্রাডিশনাল পুরোনো শিক্ষা পদ্ধতি থেকে বের হয়ে স্মার্ট এডুকেশনের যুগে প্রবেশ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। আর তাই “শিখো” এর মতো ইনোভেটিভ অনলাইন এডুকেশন প্লাটফর্মগুলো গড়ে উঠছে আদর্শ হিসেবে। গতানুগতি কোচিং বানিজ্য থেকে বেরিয়ে এসে শিক্ষাক্ষেত্রে কাজ করা সবাইকেই স্মার্টলি চিন্তা করা উচিত, ইনোভেটিভ আইডিয়া জেনারেট করা উচিত, যা সবার জন্যই সুফল বয়ে আনবে এবং টেকনিকাল বিশ্বের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এবং তাল মিলিয়ে চলার উপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা দেশে গড়ে তোলা সম্ভব হবে। Like this:Like Loading... Related Spread the lovemoremore