দেশীয় পণ্যের প্রচারে লাইভ- রাজীব আহমেদ ই-কমার্স by খাতুনে জান্নাত আশা - September 27, 2021September 27, 20212 Spread the lovemore৩১ মে, ২০২০ এ অনুষ্ঠিত Razib Ahmed স্যারের একটা লাইভের খন্ডচিত্র ছিল এটা। স্যারের মাধ্যমেই দেশীয় পণ্যের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছিল। দিন-রাত এক করে খেটেছিলেন স্যার এই ইন্ডাস্ট্রী দাঁড় করাতে, তাই আমার সর্বাধিক শ্রদ্ধাভাজন ব্যাক্তিত্ব তিনি। ৮ মে, ২০২০ তারিখে রাজীব আহমেদ স্যারকে পাই উইমেন এন্ড ই-কমার্স ফোরাম এবং ডিজিটাল স্কিলস ফর বাংলাদেশের মাধ্যমে। এরপর থেকে স্যারের প্রত্যেকটা লেখা এবং কথাই ছিল আমার গাইডলাইন। খুব বেশি মনোযোগ দিয়ে শুনতাম স্যারের প্রত্যেকটা লাইভ প্রোগ্রাম। তেমনি এক লাইভের পুরো সামারি করে উই আর ডিজিটাল স্কিলস ফর বাংলাদেশে পোস্ট করেছিলাম ৩১ মে, ২০২০ তারিখে। ১৬ মাস আগের লাইভ সামারি দেখছিলাম রেডিও ধ্বনি ৯১.২ এফ.এম এর আর.জে. সোহানা আপুর সাথে শ্রদ্ধেয় রাজীব স্যার আর খেস কন্যা প্রিয় নিগার আপুর লাইভ। অনেক অনেক কিছু শিখেছি আমি আজ। যারা দেখতে পারেন নি তাদের জন্য আমি পুরো লাইভ এর গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোকে এই পোস্টের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করছি । প্রথমে বলে নিতে চাই আর.জে সোহানা আপুর কথা, এককথায় উনি খুব আন্তরিক মানুষ বলে মনে হয়েছে আমার। আর পুরোটা লাইভ জুড়ে নিগার আপুর মায়াবী মনকাড়া হাসি খুব প্রশান্তি এনে দিচ্ছিল। আর স্যারে কথা তো না বললেই নয়,উনার মুখনিঃসৃত প্রতিটি শব্দই হচ্ছে আমাদের জন্য একেকটা শিক্ষা। এখন শুরু করা যাক– স্যারের গুরুত্বপূর্ণ কথামালা– 💁 স্যার নতুন নারী উদ্যোক্তাদের কে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য যে বিষয়গুলোর উপর জোর দিয়ে বলেছেন তা হলো- ১) উদ্যোক্তা হবার জন্য প্রবল ইচ্ছা থাকা লাগবে। ২) ই-কমার্স এবং টেকনিকাল বিষয় সম্পর্কে শিক্ষা থাকা লাগবে, যে সব শিক্ষা একটা অনলাইন বিজনেস পরিচালনার জন্য দরকার। ৩) ব্যবসা মানেই ঝুঁকি, আর এই ঝুঁকি নেওয়ার সাহস থাকতে হবে। ৪) টিকে থাকার আগ্রহ থাকতে হবে, অর্থাৎ অল্পতেই হতাশ হওয়া যাবে না, প্রথম দিকে সেল হচ্ছেনা, তাতেই ভেঙে পরা যাবে না, বিজনেসের সাথে মুখ থুবড়ে পরে থাকতে হবে এর সফলতা না আসা পর্যন্ত, অন্তত একটা বছর নতুনদেরকে খুব বেশি পরিশ্রম করে টিকে থাকতে বলেছেন স্যার। 💁 উদ্যোক্তাদের কে ধীরে ধীরে তাদের প্রোডাক্টে ভেরিয়েশন আনতে হবে, প্রোডাক্ট ডিফারেনশিয়েট করতে হবে, এক কথায় প্রোডাক্টে ভিন্নতা আনতে হবে, যেমনটা নিগার আপু করেছেন.. খেস শাড়ি নিয়ে প্রথমে শুরু করলেও এখন খেস পাঞ্জাবী এবং বেবি প্রোডাক্টও তৈরি করছেন। 💁 ৬৪ জেলার ১০ হাজার পন্যের সিলেবাস নিয়ে ওয়েবসাইট হবে, যাতে সব পন্যের ছবির সাথে সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হবে। আর আগামী বছর থেকে স্যার এই সব পন্যের পরিচিতি বই আকারে প্রকাশের কাজ শুরু করতে চান যা প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির বাচ্চাদের পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করতে চান যেন বাচ্চারা দেশীয় পন্য সম্পর্কে জেনে, দেশীয় পন্যের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে বেড়ে উঠতে পারে। 💁 ইতিহাসের শুরু থেকেই বাংলাদেশ সমৃদ্ধ ছিল। ভারতবর্ষের জিডিপির অধিকাংশ অর্জিত হত তৎকালীন বাংলা প্রদেশ থেকে। তাই বলা যায়, হাজার বছর ধরে উৎপাদনমুখী আমাদের দেশ, বাংলাদেশ। 💁 মুঘল সাম্রাজ্যের সময়ে সেই ২০০ বছর আগেই জামদানী শাড়ির দাম ৫০ হাজার টাকা ছিল, যা শুধু নবাবরা কিনত। 💁 রবীন্দ্রনাথের শেষের কবিতা উপন্যাসে লাবন্য ঢাকাই জামদানী শাড়ি পরত বলে উল্লেখ্য আছে। 💁 তাই বলা যায় আমাদের দেশীয় পন্য সারাজীবনই কোয়ালিটি সম্পন্ন ছিল, শুধু উই এর মতো কোন প্লাটফর্ম ছিল না বলে মানুষ দেশীয় পন্যকে প্রমোট করার সুযোগ বা সাহস পায় নি এতদিন। 💁 আরেকটা বিষয় সবার মনে গেঁথে নিতে হবে যে, দেশীয় পন্যের কোয়ালিটি যাই হোক আমরা দেশীয় পন্যই কিনব, তাহলে অটোমেটিক দেশীয় পন্যের মান ভালো হবে। 💁 তবে কোন দেশ ই সয়ংসম্পূর্ণ নয়। আমাদের দেশের পন্য অন্য দেশে যাবে, অন্য দেশেরটাও আমাদের দেশে আসবে। কিন্তু নিজের দেশের পন্যকে কখনো ছোট করে দেখা যাবেনা, এই বিষয়টির উপর সব থেকে বেশি জোর দিতে হবে। 💁 স্যার বলেছেন, বিদেশী কার্পেটের পরিবর্তে ঘরে ঘরে উনি রংপুরের শতরঞ্জির ব্যবহার দেখতে চান। স্যার সিলেটের রাজমা, আর সাতকড়ার সম্ভাবনার কথা বলেছেন। আমরা শুধু বিদেশি গ্রীন টি কে ভালো বলে জানি কিন্তু স্যার সিলেটের গ্রীনটিকে বিশ্বমানের গ্রীন টি বলেছেন। আমরা জানি খাদি কাপড় খসখসে মোটা প্রকৃতির হয়, কিন্তু কুমিল্লার খাদি কাপড় হয় নরম, পাতলা এবং খুব আরামদায়ক। আমরা বিদেশি পনির বেশি দাম দিয়ে কিনি কিন্তু কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামের পনির বিদেশি পনির থেকে অনেক ভালো মানের। যারা সস নিয়ে কাজ করছেন স্যার বলেছেন তাদের সস বিদেশি সসগুলো থেকে বহুগুন ভালো। কফি বলতে আমরা বুঝি চায়না, ভিয়েতনামের কফি,কিন্তু নিগার আপু বললেন রাঙামাটিতে খুব ভালোমানের কফি উৎপন্ন হয়। স্যার কে একটা প্রশ্ন করা হয়েছিল ( আমার ধারণা এটা অমুক তমুকদের সমালোচনা থেকে নেয়া প্রশ্ন 😡) প্রশ্ন টা ছিল– স্যার যেহেতু দেশীয় পন্য কে এত ভালো বলে প্রমোট করছেন তাহলে উনি নিজে কেন বিজনেস করছেন না? এর উত্তর আমি স্যারেরটার সাথে আমার নিজের কথা মিলিয়েই বলছিঃ স্যার অলরেডী সার্চ ইংলিশের মতো একটা লিমিটেড কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছেন, যিনি ফেসবুককে অনলাইন শিক্ষার কাজে ব্যবহার করার জন্য বিশ্বের শীর্ষ ১৫ জনের একজন কমিউনিটি লিডার হিসেবে পুরষ্কৃত হয়েছেন। তিনি সর্বোপরি একজন শিক্ষক, যিনি এখন উদ্যোক্তাদেরকে ই-কমার্স শিখিয়ে অনলাইন ব্যবসায় পারদর্শী করছেন। দেশীয় পন্য নিয়ে উনি চাইলেই বিজনেস করতে পারেন কিন্তু করেন না, কারণ তিনি একজন বিজনেস ম্যান হতে চান না। তিনি দেশীয় পন্যের উদ্যোক্তাদের জন্য একজন শিক্ষক, একজন গাইড, একজন পথপ্রদর্শক এবং একজন উপদেষ্টা হিসেবে থেকে সবাই কে পথ দেখিয়ে নিয়ে আরও বহুদূর এগুতে চান। সবশেষে রাজীব আহমেদ স্যারের উপদেশঃ ইন্টারনেট ভিত্তিক ব্যবসা + পড়াশোনা কে আরো গুরুত্ব দিতে হবে, অনলাইনকে সিরিয়াসলি নিয়ে এর বাস্তবমুখী প্রয়োগ সবক্ষেত্রে বাড়াতে হবে। এবং দেশীয় পন্যকে গুরুত্ব দিলে দেশ খুব দ্রুত প্রবৃদ্ধি লাভ করবে। সবশেষে নিগার আপু বলেছেন, নারীরা তাদের সাহস, মনোবল আর দৃড়তা দিয়ে নিজের কাজের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে সুন্দর ভূমিকা রাখতে পারে। ডিজিটাল স্কিলস ফর বাংলাদেশে লেখা পোস্টটি পড়তে ক্লিক করুন। Like this:Like Loading... Related Spread the lovemoremore