You are here
Home > মোটিভেশনাল > বেসিকের দিকে মন দিতে হবে- রাজিব আহমেদ

বেসিকের দিকে মন দিতে হবে- রাজিব আহমেদ

রাজীব আহমেদ
Spread the love

রাজিব আহমেদ বা আমার নাম দিয়ে সার্চ করলে গুগলে যে সব রেজাল্ট আসে আমার সম্পর্কে তাঁর একটা বড় অংশই ই-ক্যাব আর বাংলাদেশের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির সাথে জড়িত। এর খুব সহজ কারন হল ২০১৪ সালের জুন থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪৩ মাস ধরে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশান অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট এবং প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ছিলাম। এরপরেও ই-কমার্স এর সাথে আমার সম্পর্ক যেভাবেই হোক টিকে আছে। গুগল, ফেইসবুক, ইউটিউব যেখানেই সার্চ করা হোক না কেন, ই-কমার্স নিয়ে আমার অনেক পোস্ট, ইন্টারভিউ ইত্যাদি আছে।

মজার ব্যপার হল- ই-কমার্স নিয়ে আমার কোন রকম প্রাতিষ্ঠানিক সার্টিফিকেট ছিল না, এখনো নেই। এমনকি আমি সেই অর্থে ই-কমার্স বিজনেস ম্যানও নই। তারপরেও ই-কমার্স নিয়ে আমার পরিচিতি, কাজ, সুনাম, অভিজ্ঞতা সব কিছুই অনেকের থেকে অনেক বেশি। যা করেছি নিজে নিজে শিখেছি, জেনেছি এবং করেছি। ই-কমার্স আমার নিজের কাছে ব্যবসা ছিল না যেখানে শুধু লাভ করতে হবে। এটি ছিল এমন কিছু যা ইন্টারনেটের শক্তি কে কাজে লাগিয়ে অনেক মানুষের জীবন বদলানো যায়- শিক্ষিত লোকদের কাজের নতুন জগত তৈরি করা যায়। এজন্যই আমি ভালোবেসে এত কষ্ট করেছি এই সেক্টরের জন্য।

তাই আমি বিশ্বাস করি যে কোন কাজের প্রতি ডেডিকেটেড থাকলে সেদিকে সফল হওয়া সম্ভব। একদম চোখের সামনে বিলিয়ন ডলার ইন্ডাস্ট্রি হতে দেখলাম মাত্র ৫ বছরেরমধ্যে। ২০১৬ সালে যখন আমি বলি যে ই-কমার্স ৫ বছরের মধ্যে বিলিয়ন ডলার ইন্ডাস্ট্রি হবে তা নিয়ে অনেকেই উপহাস করেছে আমাকে নিয়ে। কিন্তুআমি জানতাম যে এটি হবেই কারন দিন রাত ২৪ ঘন্টা ই-ক্যাব নিয়ে কাজ করতে করতে এর অনেক কিছুই বুঝতে শিখেছি অনেক। ২০২৫ সালের মধ্যে এই ইন্ডাস্ট্রিতে অন্তত ১০ লাখ লোক কাজ করবে তাও বলেছি অনেকবার।

ই-কমার্স নিয়ে যাই বলেছি তা নিজের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা থেকে বলেছি। দেশি পণ্যের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির ভিত তৈরির জন্য কাজ করে গেছি এবং এ নিয়ে সার্চ করলেও আমার অনেক লেখা, ইন্টারভিউ আসে। আসে কাকলি আপু, নিগার আপুদের মত যাদের তৈরি করেছি তাদের কথা, তাদের লেখা ইত্যাদি। যাই হোক, এ লেখা আমার নিজের জন্য নয় বরং যারা পড়ছেন বা পাঠক আপনার জন্য।

ফেইসবুকের কল্যানে আর ই-ক্যাব, সার্চ ইংলিশ, উই এর মত সংগঠন এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর কারনে শত শত মানুষকে দেখার অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে সারাদেশ থেকে- অনলাইনে এবং অফলাইনে দুদিকেই। বেশির ভাগ মানুষ তেমন ভাল করতে পারে না শুধুমাত্র নিয়মিত না হবার কারনে। লেখাপড়ার দিকে তারা নিয়মিত না এবং কাজের দিকে নিয়মিত না। ফলে লেখাপড়া আর কাজ কে তাদের অনেকের কাছে শাস্তির মত মনে হয়।

কোন কাজ আমাদের কাছে কঠিন বলে মনে হলে ভাল না লাগলে তাতে ভাল করা প্রায় অসম্ভব। অপর দিকে কোন কাজ যদি ভাল লাগে তা ঘন্টার পর ঘন্টা করতে ভাল লাগে। এটি আমরা সবাই জানি এবং বুঝি। তাই ভাল লাগার ব্যপারটি নিজের মধ্যে তৈরি করতে পারাটাই আসল চ্যালেঞ্জ।

এখন কথা হল – নিজে নিজে জীবনে কতদূর এগুনো যায়? এমন প্রশ্ন অনেকের থেকে পেয়েছি আমি গত ৭ বছরে। তাদের একটা বড় অংশের বয়স ২০-৩০ এর মধ্যে। বিশেষ করে আমাদের অনেকের মধ্যে এই ধারনা বদ্ধমূল হয়ে গেছে যে লেখাপড়া শেষ করে আর নতুন করে শেখার কিছু নেই। আবার অনেকে এও মনে করেন যে বিসিএস, ব্যাংক বা বিশেষ কিছু চাকুরি না পেলে ক্যারিয়ার শেষ। আর কিছু করা হবে না।

যারা জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে বলে মনে করেন তাদের পক্ষে জীবনে ভাল কিছু করা কঠিন, আসলে প্রায় অসম্ভব বলা চলে।

আশাবাদী মানসিকতা থাকা জীবনে প্রচন্ড দরকার। এখন কথা হল যার লেখাপড়ার ব্যাকগ্রাউন্ড ভালো না, যে ভাল কেন খারাপ চাকুরিও পায় নি, যে ব্যবসা তে সুবিধা করতে পারছে না এমন লোকের পক্ষে কি আসলেই আশাবাদী হওয়া সম্ভব? না মনে হয়। এটাই সত্যি আসলে। অনুপ্রেরণামূলক লেখাপড়তে ভিডিও দেখতে ভালো লাগে আমাদের কিন্তু জীবনের বাস্তবতা তো বদলাবে না তাতে।

তাহলে কি করা যেতে পারে? এজন্য যা করা যেতে পারে তা হল কোন কাজে ব্যস্ত থাকা। শত শত তরুন এবং তরুণীদের দেখে আমার মনে হয়েছে এখনো তাই মনে হয় যে তাদের আসল সমস্যা রয়েছে বেসিক স্কিল এবং নলেজের দিকে। ভাষার দক্ষতায় অনেক ঘাটতি আছে। ইংরেজির কথা বাদই দিলাম বাংলা ভাষায় ১০ মিনিটে ১০০ শব্দ নিজের ভাষায় টাইপ করার দক্ষতা অনেকের নেই। বাংলাতে দিনে ১০-২০ পেইজ বই পড়ার অভ্যাস নেই অনেকের। অন্য বই না, গল্পের বই না- নিজে যে সাব্জেক্টে অনার্স পড়েছেন সেই বইয়ের কথা বলছি। দৈনিক পত্রিকা অনেকেই পড়েন না। অনেকেই ফেইসবুকে একটু বড় পোস্ট পড়তে আগ্রহী নন- তা যত কাজের হোক না কেন।

এই লেখা আর পড়ার দিকে আগ্রহ না থাকার কারনে বেশির ভাগ তরুন হতাশ হয়ে যায় এবং আর জীবনে এগিয়ে যাবার স্বপ্ন থাকে না, আগ্রহ থাকে না। লেখা আর পড়ার বেসিকের দিকে চেষ্টা না করলে আসলেই আর এগুনো সম্ভব হয় না। কারন আমরা শিখতে পারি বই, পত্রিকা, ম্যাগাজিন, ইন্টারনেটের ওয়েবসাইট এগুলো থেকে পড়ে। আর নিজেদের জ্ঞান, দক্ষতা প্রকাশ করি লেখার মাধ্যমে। যে পেশাতেই থাকিনা কেন এটাই করতে হয় ঘুরে ফিরে।

রাতারাতি কোন কাজে সাফল্য আসে না। কিন্তু ১০০ দিন মন দিয়ে চেষ্টা করলে বেসিক স্কিল অনেক কিছুই তৈরি করা সম্ভব হয়। ১০০ দিন ধরে প্রতিদিন যদি ১ ঘণ্টা বাংলা পত্রিকাও পড়েন তাহলে প্রথম দিন যদি ১ পেইজ পড়তে পারেন ১০০ দিন পড়ে সেই ১ ঘন্টা সময়ে অন্তত ৫-৬ পেইজ পড়তে পারবেন। এতে করে আপনার জীবন বদলাবে না ১০০ দিনে কিন্তু সারাজীবন একটু একটু করে এগিয়ে যাবার অভ্যাস আর ভিত তৈরি হবে।

আমি ব্যক্তিগত ভাবে বিশ্বাস করি যে, প্রতিদিন ১০ ঘন্টা করে কোন কাজে সময় দিলে ১ মাসের মধ্যে লক্ষনীয় উন্নতি আসে। এটাই নিয়ম আসলে এবং এর কোন ব্যতিক্রম নেই। তাই কেউ চেষ্টা করে গেলে ধীরে ধীরে সেদিকে দক্ষতা আসে এবং হতাশা দূর হতে থাকে।

আরেকটা ব্যপার ঘটলে আশা তৈরি হয়। আপনি দেখছেন আপনার চারপাশে কয়েকজন আপনার মতই কোনদিকে দুর্বল ছিল, হতাশ ছিল জীবনে। তারপর তারা ধীরে ধীরে তা থেকে বের হয়ে ভাল করছে। অসাধারণ কিছু না করলেও অন্তত আগের তুলনায় অনেক ভাল করছে। হিংসা না করে যদি তাদের উন্নতির দিকে লক্ষ্য করেন তাহলে আপনার মধ্যে আশা সঞ্চার হতে বাধ্য।

লেখক- রাজিব আহমেদ, সাবেক ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ই-কমার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(ই-ক্যাব)


Spread the love
খাতুনে জান্নাত আশা
This is Khatun-A-Jannat Asha from Mymensingh, Bangladesh. I am entrepreneur and also a media activist. This is my personal blog website. I am an curious woman who always seek for new knowledge & love to spread it through the writing. That’s why I’ve started this blog. I’ll write here sharing about the knowledge I’ve gained in my life. And main focus of my writing is about E-commerce, Business, Education, Research, Literature, My country & its tradition.
https://khjasha.com

Leave a Reply

Top
%d bloggers like this: