You are here
Home > প্রযুক্তি > পাটের আঁশে “ফর্মুলা ওয়ান” রেসিং কার!

পাটের আঁশে “ফর্মুলা ওয়ান” রেসিং কার!

কিলোফাইট আলফা টিম
Spread the love

 পাটের আঁশে রেসিং কার!!

 

পাট চিরদিনই আমাদের প্রধান অর্থকরী ফসল, যা সোনালী আঁশ বলে পরিচিত হয়ে এসেছে, অনেক সম্ভাবনা এর মাঝে সুপ্ত বলেই। আমাদের কাজ শুধু এর সুপ্ত গুণগুলোর বিকাশে চেষ্টা করা। আমি স্পেশালি পাটশিল্প নিয়ে সব সময়ই স্বপ্নে বিভোর থাকি। কারণ পাট নিয়ে যতবার পড়তে গিয়েছি, লিখতে গিয়েছি, এই শিল্পের সম্ভাবনাগুলো আমাকে মুগ্ধ করেছে, অনেক বেশি আশা জাগিয়েছে। কয়েকটা কন্টেন্ট আর্টিকেলই আমি লিখেছি এই শিল্প নিয়ে।

তবে দুঃখিত হয়েছি এই ভেবে যে, পাটশিল্প নিয়ে সিরিয়াসভাবে কাজ করার লোক কম। ক্ষুদ্র পরিসরে, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা নিজেদের মতো চেষ্টা করে যাচ্ছে। আশা করছি এক সময় এই ক্ষুদ্র উদ্যোগগুলো থেকেই বিশালতা পাবে এই শিল্প।

 

এখন আসি পাটের আঁশের রেসিং কারের কথায়!

 

শিরোনাম সবাইকে হয়ত অবাক করেছে, তবে সত্যিই এমন অভাবনীয় উদ্ভাবনই করেছেন  বাংলাদেশের খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটি (কুয়েট) এর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের একদল শিক্ষার্থী। তারা নিজস্ব প্রযুক্তির ব্যবহার করে তিন বছরের চেষ্টায় সম্প্রতি রেসিং কারটি তৈরি করেছেন, যার বডিসহ বিভিন্ন অংশে ব্যবহার করা হয়েছে পাটের আঁশ বা জুট ফাইবার।

“ফর্মুলা স্টুডেন্ট” নামে যুক্তরাজ্যের একটি প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় তারা এই রেসিং কার নিয়ে। ফর্মুলা স্টুডেন্ট একটি ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিযোগীতা, যা প্রতি বছরই যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বের সেরা ইঞ্জিনিয়ারদেরকে বাছাই করে নেয়ার জন্য।

 

গাড়িটি তৈরীতে কাজ করা এই শিক্ষার্থীদের টিমের নাম “কিলো ফ্লাইট” এবং তাদের টিমের নামে গাড়িটির নামকরণ করা হয়েছে “কিলো ফ্লাইট আলফা”

সম্পূর্ণ বডি জুট ফাইবার দিয়ে তৈরি গাড়িটিতে উন্নত ইঞ্জিন, গিয়ার, ব্রেক, মিটার রয়েছে। চালকের জন্য রয়েছে সুরক্ষা ব্যবস্থা, যা ঘণ্টায় ১৬২ কিলোমিটার বেগে চলতে সক্ষম!

করোনার কারণে তারা প্রতিযোগিতাকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। রেডজোনে থাকার কারণে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ কিছু দেশ অনলাইন ইভেন্টে অংশ নেয়। ৬৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিযোগী কুয়েট ৩৩তম স্থান লাভ করেছে। বাংলাদেশ থেকে শুধুমাত্র “টিম কিলো ফ্লাইট” এই প্রতিযোগীতায় অংশ নিয়েছে।

অটোমোবাইলে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিতে এবং দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার তৈরির জন্যই তাদের এই উদ্যোগ।

কুয়েটের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও নিজেদের অর্থায়নে এই রেসিং কারটি প্রস্তুত করা হয়েছে। সরকারি এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থায়ন পেলে শিক্ষার্থীরা আরও ভালো করতে পারত বলে জানিয়েছেন তাদের কিলোফ্লাইট টিমের ক্যাপ্টেন এরফান ইসলাম।

ফর্মুলা  ওয়ান
ছবিঃ ফর্মুলা ওয়ান কার

 

ফর্মুলা ওয়ান কারের আদলে তৈরি হয়েছে এই রেইসিং কারটি।

 

ফর্মুলা ওয়ান বা এফ ১ কার হচ্ছে বিখ্যাত রেসিং কার, যেগুলোতে একটামাত্র সীট থাকে, খোলা ককপিট থাকে, ড্রাইভিং সীটের পাশেই থাকে গাড়ির ইঞ্জিন।

 

এই গাড়িগুলো শুধুমাত্র ফর্মুলা ওয়ান রেইসিং কম্পিটিশনেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই প্রতিযোগীতা এফআইএ ফর্মুলা ওয়ান ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশীপ নামে পরিচিত। প্রতি বছর ইন্টারন্যাশনাল অটোমোবাইল ফেডারেশন (এফআইএ) ফর্মুলা ওয়ান  প্রতিযোগিতা আয়োজন করে থাকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।

 

ফর্মুলা  ওয়ান চ্যাম্পিয়নশীপ
ছবিঃ ফর্মুলা ওয়ান চ্যাম্পিয়নশীপ

সাধারণত সারাবিশ্বেই গাড়ি তৈরীতে কার্বন ফাইবার ব্যবহার করা হয়। আর কার্বন পরিবেশের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর বলে জানি। তবে শিক্ষার্থীদের তৈরী এই কিলোফ্লাইট আলফা যেহেতু পরিবেশবান্ধব পাট দিয়ে বানানো, তাই এটি সারাবিশ্বে বেশ সাড়া ফেলতে পারে।

 

পরিবেশবান্ধব জুট ফাইবার এবং নিজস্ব প্রযুক্তির ব্যবহারে তৈরী এই রেসিং কারকে ঠিকভাবে রিপ্রেজেন্ট করতে পারলে দেশের অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রি এবং পাটশিল্প উভয় খাতই সমৃদ্ধি লাভ করবে। সেই সাথে দেশের অর্থনীতিও এগিয়ে যাবে বলে আমি ভীষণ আশাবাদী।


Spread the love
খাতুনে জান্নাত আশা
This is Khatun-A-Jannat Asha from Mymensingh, Bangladesh. I am entrepreneur and also a media activist. This is my personal blog website. I am an curious woman who always seek for new knowledge & love to spread it through the writing. That’s why I’ve started this blog. I’ll write here sharing about the knowledge I’ve gained in my life. And main focus of my writing is about E-commerce, Business, Education, Research, Literature, My country & its tradition.
https://khjasha.com

2 thoughts on “পাটের আঁশে “ফর্মুলা ওয়ান” রেসিং কার!

  1. খুব সুন্দর লিখেছেন আপু। পাট নিয়ে আমাদের দেশে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে।

Leave a Reply

Top
%d bloggers like this: