You are here
Home > বুক সামারি & রিভিউ > কিশোর ক্লাসিক রিভিউ- আমিও পারি- অ্যালান মার্শাল

কিশোর ক্লাসিক রিভিউ- আমিও পারি- অ্যালান মার্শাল

কিশোর ক্লাসিক রিভিউ- আমিও পারি- অ্যালান মার্শাল
Spread the love

আমিও পারি

অ্যালান মার্শাল

 

 

বইটা লেখক অ্যালান মার্শালের ছোটবেলার গল্প নিয়ে লেখা, আত্মজীবনীই বলা যায়। গতকাল মোমবাতির আলোয় গল্পটা পড়ে শেষ করেছি, হাজারো প্রতিকূলতার ভেতরেও কিভাবে উঠে দাঁড়াতে হয় এই গল্পটা আমায় তাই শিখিয়েছে। আমিও কাল একটা প্রতিকূল অবস্থায় থেকেই গল্পটা পড়েছি, তাই এর স্বাদ আরও ভালোভাবে ফিল করতে পেরেছি৷

 

 

এই গল্পটা পড়ে নিজেকে নিয়ে আপনার লজ্জা হবে, যেমনটা আমার হয়েছে। কারণ আমি আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ একজন মানুষ। আমার হাত, পা, চোখ, কান সব শতভাগ সচল থাকার পরও আমি এগুলোর সঠিক ব্যবহার জীবনে করতে পারিনি, শেখার ইচ্ছের অভাবে অনেক কিছু শিখতে পারিনি, বরং অনেক অজুহাত দিয়ে, ফাঁকিবাজি করে নিজেকে অনেক ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে রেখেছি।

 

 

আর এই অ্যালান ছেলেটা- ছোটবেলায় পোলিও রোগে আক্রান্ত হয়ে নিজের একটা পা হারিয়েছে, কিন্তু কখনো তার হারানো পা কে নিজের দুর্বলতা ভাবেনি। কেউ তাকে দয়া করুক, সহানুভূতি দেখাক এটা আশা করেনি, বরং কেউ করুণার দৃষ্টিতে তাকালেও রাগ হত খুব।

 

আর আমাদের দেশে দেখবেন সামান্য শারীরিক অক্ষমতাকেও অনেক বড় করে তুলে ধরে মানুষের দয়ায় বেঁচে থাকতে চায় লাখ লাখ মানুষ। এটা দুঃখজনক।

 

 

তবে গল্পটা পড়তে পড়তে বার কয়েক আমাদের উই এর প্রিয় মুখ মহুয়া আপুর কথা মনে পরছিল, উনি যেন সেই ছেলেটারই প্রতিরূপ, কোনো অক্ষমতাকে তাদের সাফল্য অর্জনের পথে বাঁধা হতে দেন নি উনারা। স্বগর্বে নিজ আলোয় আলোকিত হয়েছেন। পরম শ্রদ্ধা ভেতর থেকে আসে এই মানুষগুলোর প্রতি।

 

 

ফিরে আসি অ্যালান এর কথায়

 

 

এই এক পা হীন ছেলেটা কে অক্ষম ভাবত সবাই, করুনা করত, এই ছেলে চিরদিন হুইল চেয়ার আর বিছানায়ই কাটিয়ে দিবে ভেবেছিল সবাই, ছেলেটা সবার ভাবনা কে মিথ্যা প্রমান করেছে তার প্রবল ইচ্ছাশক্তির জোরে।

 

 

ওর ঘোড়সওয়ার বাবা, আর মা হয়ত ওদের ছেলের জন্য দুঃখ পেতেন , কিন্তু ওকে বুঝতে দিতে চাইতেন না। প্রতিনিয়ত নিজের অক্ষমতার কাছে হার না মানা ছেলেকে দেখে তারা মনে মনে সুখীই হতেন। কখনও ছেলেকে বাঁধা দেন নি কিছু করার জন্য, ঘরে বসে থাকতে বলেন নি অক্ষমতার কথা ভেবে। ছেলেও তাদের এই ভরসার মান রেখেছেন, নিজের কল্পনার চেয়েও ছাড়িয়ে গেছেন। অ্যালান যখন যা ইচ্ছে করত, তা করে ফেলত,সফল হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত চেষ্টা করে যেত।

 

 

* তার এলাকায় কেউ সাঁতার জানত না, অথচ হুইল চেয়ারে করে এই ছেলে দুই ক্রুশ দূরের খালে গিয়ে একা একা এক বছরে প্রচেষ্টায় সাঁতার শিখেছে এই একপা নিয়ে!!!

 

* যেখানে ঘোড়দৌড় শিখতে একজন সক্ষম মানুষেরই হিমশিম খেতে হত, ঘোড়া চালনা দুই পায়ের ব্যবহার ছাড়া অসম্ভব ছিল, ওর বাবা দুঃখ পেতেন ছেলে ঘোড়া দৌড়াতে পারবে না বলে, সেখানে অ্যালান একাকী একান্তই নিজের চেষ্টা আর ইচ্ছাশক্তির জোরে সেরা ঘৌড়াসওয়ার হয়ে উঠেছিল। মা-বাবা দেখে ভীষণ খুশি হয়েছিলেন সেদিন।

 

* এই ছেলের প্রাপ্তির শেষ নেই সত্যিই, পড়াশোনায়ও কম ছিল না, স্কলারশীপ পেয়ে কলেজে পড়ারও সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল সে, আর পেয়েছিল সর্বোচ্চ পদমর্যাদার আর বড় অংকের বেতনের একাউন্টেন্ট এর চাকরি। সেদিন তার মা বাবার সব দুঃখের দিনেরও অবসান করেছিল এই একপা ওয়ালা ছেলেটা।

 

কোনো স্বপ্ন অপূর্ন রাখেনি অ্যালান, তার লেখক হবার স্বপ্নও পূরণ করে হয়ে উঠেছিল বিখ্যাত লেখক – অ্যালান মার্শাল।

 

এক পা তার কোনো প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায় নি, বরং আমাদের মতো পরিপূর্ণ সক্ষম মানুষদের জন্য উদাহরণ হয়ে আছে, আমার তো নিজেকে নিয়ে খুব লজ্জা হচ্ছে এটা পড়ার পর থেকে!!

 

সৃষ্টিকর্তা আমাকে এতোটা পরিপূর্নতা দেয়ার পরও কেনো আমি এতো অপূর্ণ, নিজের স্বপ্ন পূরণে এতোটা পিছিয়ে আছি কেনো!!

 

অ্যালানের মতো আমাকেও পারতে হবে, জীবনে যত বাঁধাই আসুক তাকে জয় করে জোর গলায় বলতে হবে –

” আমিও পারি”


Spread the love
খাতুনে জান্নাত আশা
This is Khatun-A-Jannat Asha from Mymensingh, Bangladesh. I am entrepreneur and also a media activist. This is my personal blog website. I am an curious woman who always seek for new knowledge & love to spread it through the writing. That’s why I’ve started this blog. I’ll write here sharing about the knowledge I’ve gained in my life. And main focus of my writing is about E-commerce, Business, Education, Research, Literature, My country & its tradition.
https://khjasha.com

Leave a Reply

Top
%d bloggers like this: