কিশোর ক্লাসিক- দুঃসাহসী টম সয়্যার – মার্ক টোয়েন বুক সামারি & রিভিউ by খাতুনে জান্নাত আশা - September 15, 20210 Spread the lovemoreকিশোর ক্লাসিক- দুঃসাহসী টম সয়্যার মার্ক টোয়েন প্রথম দুই পার্ট পড়েই থেমে এই অংশটুকু লিখতে বাধ্য হয়েছিলাম- দুষ্ট বালক টমও যে মানব চরিত্রের দুটো বড় সত্যকে আবিষ্কার করে ফেলেছে সেটা আপনাদেরকে জানাতে। টম এক কথায় দুষ্টের শিরোমনি। মা-বাবা নেই, খালার কাছে বড় হচ্ছে, কিন্তু খালা কোনো ভাবেই এই বেয়াড়া ছেলেকে বাগে আনতে পারে না। একদিন এক বুদ্ধি আটল খালা যে, টমকে কঠিন একটা কাজ দিবে যেন সে কোনোভাবেই পালিয়ে দুরন্তপনা করতে যেতে না পারে কাজ রেখে। যেই ভাবা সেই কাজ, খালা ওকে বাড়ির বেড়া রং করতে দিল। তো, টম সেই কাজ শুরু করার পর অনেক ফন্দি ফিকির করল সেটা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এবং এক সময় সফলও হলো। কিভাবে?! টম যখন বেড়ায় রং করছিল তখন ওর এক বন্ধু যাচ্ছিল ওই পথ দিয়ে। টম কে কাজ করতে দেখে তো সে ভীষণ অবাক, ছেলেটা সমবেদনা জানাল এই ভেবে যে দুষ্টবালক টমের তো দুষ্টুমি রেখে কাজ করার কথা নয়! নিশ্চয় ওর কষ্ট হচ্ছে কাজ করতে। কিন্তু টম ওকে বোঝালো যে, কাজটা সে খালার কথা রেখে দায়িত্ব নিয়ে করছে এবং সে এই কাজ করার সুযোগ পেয়ে নিজেকে গর্বিত ভাবছে, উপভোগ করছে, বেড়ায় রং করতে পারার সৌভাগ্য কয়জনের হয়!! ওর বন্ধু তখন খেয়াল করল, আরে, সত্যিই তো! কি সুন্দর করে টম ব্রাশ চালিয়ে উপর নিচ করে রং ছড়িয়ে বেড়ার চেহারাই পুরো বদলে দিচ্ছে। ও এটা দেখে খুব আগ্রহ বোধ করল। নিজেই বেড়ায় রং লাগানোর অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চাইল। টম কে সে তার খেতে থাকা আপেলটা উপহার দিয়ে বেড়ায় রং লাগাতে দেয়ার সুযোগ চাইল। টম প্রথমে ইচ্ছে করেই একটু বাহানা করে অবশেষে ওকে রং লাগানোর সুযোগ দিয়ে মনে মনে হাসল যে, ওর প্ল্যান অবশেষে সফল হয়েছে, সে তখন গাছের ছায়ায় আরামে বসে আপেল খেতে খেতে বন্ধুর রং করা দেখতে লাগল। ওর ওই বন্ধু রং করে যখন ক্লান্ত তখন থামল, এরপর শুধু সেই বন্ধুকে দিয়েই নয়, রাস্তা দিয়ে টমের আরও যত বন্ধু যাচ্ছিল সবাইকে দিয়ে টম কৌশলে কাজ করিয়ে নিল। রং তো করালোই, উল্টো সবাই তাকে আরও উপহার দিয়ে গেল বিভিন্ন কিছু!! রং শেষ না হয়ে যাওয়া পর্যন্ত এটা চলতে থাকল। টম তখন উপলব্ধি করল- ” এক, দুর্লভ জিনিসের প্রতি মানুষের অসাধারণ লোভ। যতো তুচ্ছই হোক, মানুষের প্রচন্ড আগ্রহ মূল্যবান করে তুলে ওই জিনিসটা কে। দুই, কাজকে কাজ হিসেবে নিলেই কঠিন। খেলা হিসেবে নেয়া গেলে অনেক অনেক সহজ হয়ে যায়। ” রং লাগানোর কাজটা টমের কাছে কঠিন লাগছিল, কারণ সে এটাকে কাজ হিসেবে নিয়েছিল তাই উপভোগ করতে পারছিল না। কিন্তু তার বন্ধুদের কাছে এই কাজটাই ছিল বিশেষ কিছু যা কখনো করার সুযোগ তাদের হয়ে উঠে নি, তাই তারা এই দুর্লভ কাজের প্রতি আকর্ষন বোধ করে সেটাকে মূল্যবান করে তুলেছিল এবং খেলার মতো উপভোগ করেছিল। খুব আহামরি কোনো গল্প নয় এটা, তবে এর সহজবোধ্যতার জন্যই হয়ত জনপ্রিয় এটা। এতে টম সয়্যার আর ওর বন্ধুদের দুষ্টুমিকে মার্ক টোয়েন যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন এগুলো তো প্রত্যেকটা দুষ্ট বাচ্চাদের কাজ। বাস্তবে এর থেকেও ভয়াবহ দুঃসাহসিক কাজ বাচ্চারা করে ফেলে। শহরের বাচ্চারা এমন সাহসিকতা দেখানোর সুযোগ না পেলেও গ্রামের বাচ্চারা ঠিকই করে। ওরা হয় নির্ভিক, স্বাধীন, যখন যেমন ইচ্ছে তাই করে দুষ্টুমি তে মেতে থাকে সারাক্ষন। আমি গল্পের নাম আর এর শুরুটা পড়ে আরও বেশি কিছু এক্সপেক্ট করেছিলাম আসলে। এর বেশি কিছু আর লিখছি না এটা নিয়ে। Like this:Like Loading... Related Spread the lovemoremore