কিশোর ক্লাসিক-গোয়েন্দা টম সয়্যার বুক সামারি & রিভিউ by খাতুনে জান্নাত আশা - August 21, 20210 Spread the lovemore “গোয়েন্দা টম সয়্যার” মার্ক টোয়েন টম আর হাকলবেরি ফিন জাহাজে করে যাচ্ছিল আরকানসে ওর আঙ্কেলের বাড়ি। সেই জাহাজে হঠাৎ পেয়ে গেলো রহস্যের গন্ধ! জানতে পারল এই জাহাজে করেই যাচ্ছে এক হীরা চুর! ছদ্মবেশে হীরাচুরের সাথে কথা বলে ওকে সাহায্য করার আশ্বাস দিয়ে সে জানার চেষ্টা করতে লাগল আসল ঘটনা টা কি। ওরা ৩জন মিলে ১২ হাজার সমমূল্যের ২টা হীরা চুরি করেছিল। ৩জন ২টা হীরা কি করে ভাগ করে নিবে! চুরি করার পর থেকেই তাই ৩ জনের মনেই কুমতলব এঁটেছিল কি করে অন্য দুজনকে ফাঁকি দিয়ে নিজেই হীরাগুলো দখল করা যায়। আরেকটা মজার ব্যাপার হলো, টমের সাথে কথা বলা চোর টা ওর পরিচিত, ওর সাইলাস আঙ্কেলের বাড়িতে কাজ করা জুপিটার ড্যানলপেরই জমজ ভাই জ্যাক ড্যানলপ, যে বহুবছর জেলএ ছিল। এই জ্যাক আর ক্লেটন মিলে ওদের সারগেদ বাড ডিকসন কে মাতাল করে হীরা চুরি করে নিতে চাইল। বাড যখন হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়ল তখন দুজন মিলে চুপি চুপি হীরার খামটা নিয়ে চলে আসল। এরপর খামটা খুলে দেখার পর তো তাদের মাথায় হাত! হীরা কোথায় এতো মিছরির টুকরা, ওদের বোকা বানিয়ে আগেই হীরাগুলো সরিয়ে ফেলে নিশ্চিন্তে এখব নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে বাড। হঠাৎ জ্যাকের মাথায় আসল বাড হীরাগুলো কোথায় লুকাতে পারে, মনে পড়ল ওর যে বাড কে সে দেখেছিল দোকান থেকে স্ক্রু ডাইবার কিনেছে। মাথায় আসল তার যে, জুতার হিলে স্ক্রু লাগানো থাকে। এটা মাথায় আসার পর সে চুপচাপ চিন্তা করতে লাগল আর অপেক্ষা করতে লাগল সুযোগের। দেখতে দেখতে যখন বাডের সাথে ক্লেটনও ঘুমিয়ে পড়ল, ঠিক তখনই জ্যাক বাডের জুতাগুলো দেখতে পেল আর হিল টা দেখে বুঝতে পারল এর ভেতরই লুকিয়ে রেখেছে হীরাগুলো। সুযোগ বোঝে সে বাডের জুতাগুলো পরে পালাল। জ্যাক যখন বোঝল জাহাজে তার সঙ্গী চোরেরাও আছে, ওকে খুঁজতে এসেছে, তখন সে সুযোগ বোঝে জাহাজ থেকে নেমে পরল। ১০ মিনিট পর ওর সঙ্গী দুজনও নেমে ওর পিছু নিল। টম আর ফিনও নামল জাহাজ থেকে, জ্যাক কে কথা দিয়েছিল ওরা জঙ্গলে ওর জন্য অপেক্ষা করবে। ওরা পৌঁছাতে পৌঁছাতে বেশ অন্ধকার হয়ে গেল, শুনলো একটা চিৎকার। টম ধরে নিল যে, জ্যাকের সঙ্গীরা ওকে মেরে হীরাগুলো নিয়ে পালিয়েছে। ওদিকে টমের সাইলাস আঙ্কেল খুব ধার্মিক আর খুব ভালো মানুষ, কিন্তু উনার মাঝে হঠাৎ খুব অস্থিরতা দেখা দিল। আর গ্রামে খবর ছড়িয়ে পড়ল জুপিটার খুন হয়েছে, কারণ ওকে পাওয়া যাচ্ছে না। টম এটা শুনে ফিন আর একটা কুকুরকে নিয়ে লাশ খুঁজতে গেলো, আর পেয়েও গেলো। আর তখন সাইলাস খালু বলল, উনিই জুপিটার কে মাথায় বাড়ি দিয়ে মেরে ফেলেছেন, পুলিশ উনাকে ধরে নিয়ে গেলো। টম ওর খালুর এই অবস্থার জন্য নিজেকে দায়ী করল, সে লাশটা খুঁজে না বের করলে খালুর এই অবস্থায় পরতে হতো না। এটা ভেবেই সে খালুকে নির্দোষ প্রমান করার জন্য সব চেষ্টাই করবে ভাবল। অনেক ভেবে টম পুরো ঘটনা আসলে কি ঘটেছিল সেদিন সন্ধ্যায়, সেটা সে আদালতে সবার সামনে বর্ণনা করল। ওর খালুর মারে জুপিটারের আসলে কিছুই হয় নি। সেদিন ডুমুরের বনে যখন জ্যাকের সঙ্গীরা ওকে খুন করে, তখন জুপিটার সেটা দেখতে পেয়ে জ্যাকের জামা কাপড় সব পরে ওর ছদ্মবেশ নিয়ে আবার গ্রামে ফিরে আসে। যেহেতু তারা জমজ ভাই তাই গায়ের কেউ সেটা বুঝতে পারে নি। এবার জর্জ সাহেব জানতে চাইলেন, তাহলে হীরাগুলো এখন কোথায়? টম বলল, জুপিটারের কাছেই আছে , আর এটা এখনো জুপিটার নিজেই জানেনা। সবাই এ কথা শুনে অবাক হলো। টম একটা স্ক্রু ডাইবার চাইল, কেউ সেটা ওর হাতে দিলে জুপিটারের জুতাগুলো নিয়ে হিল খুলে ফেলল আর পেয়ে গেলো সেই হীরাগুলো, ওর খালুও নির্দোষ প্রমাণিত হলো। সবাই তো অবাক! টমের প্রশংসায় পঞ্চমুখ তারা। যে ব্যাংক থেকে হীরা গুলো চুরি হয়েছিল সেই ব্যাংক হীরা পেয়ে দিলে তার জন্য ২০০০ ডলার পুরষ্কার ঘোষণা করেছিল আর তা এখন টম পেয়ে গেলো, ১হাজার ডলার সে ফিন কে দিয়ে দিল, যদিও ফিনের কোনো অবদান হীরা খুঁজে পাওয়ায় নেই। আসলে ভালো মানুষের পেছনেই শত্রু লাগে বেশি, নানা ভাবে বিপদে ফেলার চেষ্টা করে৷ তবে ভালো মানুষী আর সততার পুরষ্কার সে পায়ই এক সময়। সাইলাস খালু ভালো মানুষ, তাই গায়ের লোক তাকে সাময়িক ভুল বোঝলেও নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার পর উনাকে আবারও সর্বোচ্চ সম্মানের আসনে বসিয়েছিল। আর চোখ কান খোলা রেখে টমের মতো বিচক্ষনতার সাথে কিছু ভাবলে, সরাসরি ঘটনা প্রত্যক্ষ্য না করেও কি ঘটেছে তা বোঝা যায়। Like this:Like Loading... Related Spread the lovemoremore