You are here
Home > পর্যটন > Tourism Mymensingh > ই-ট্যুরিজমে ময়মনসিংহে নির্মিত দেশের প্রথম বৈদ্যুতিক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ

ই-ট্যুরিজমে ময়মনসিংহে নির্মিত দেশের প্রথম বৈদ্যুতিক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ

মদিনা মসজিদ
Spread the love

দেশের প্রথম বৈদ্যুতিক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ ময়মনসিংহে

কিছু জায়গার নামের সাথে আমাদের আবেগ জড়িয়ে থাকে। নাম শুনেই মন অস্থির হয়ে উঠে, আনমনেই হয়ত উচ্চারিত হয়- ইস! যদি যেতে পারতাম!

বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য এমনই কিছু আবেগতাড়িত নাম মদিনা, মসজিদে নববী, যে নামগুলোর সাথে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মানুষ হযরত মুহাম্মদ (স) এর স্মৃতি জড়িয়ে আছে। প্রিয় নবীর স্মৃতি বিজড়িত এই জায়গাগুলোতে গিয়ে উনাকে আরও গভীরভাবে অনুভব করার স্বপ্ন দেখে প্রত্যেক মুসলিম ধর্মপ্রেমী মানুষ।

আর ঠিক এ কারণেই ময়মনসিংহে মসজিদে নববী’র আদলে তৈরী “মদিনা মসজিদ” আকর্ষন করছে বহু মানুষকে। এই দুইটা নামের সমন্বিত আকর্ষনেই ছুটে আসছে প্রতিদিন বহু মানুষ, পবিত্র, বিশেষত্বপূর্ণ আর অপূর্ব কারুকাজে নির্মিত এই আল্লাহর ঘরে নামাজ আদায় করে প্রশান্তি পাচ্ছে তারা।

চমকপ্রদ ও নান্দনিকতায় পরিপূর্ণ এবং আধুনিক প্রযুক্তির মিশেলে তৈরী এই মদিনা মসজিদ ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরখরিচা নামক নিভৃত এক সবুজ গ্রামে নির্মিত হয়েছে। ২০১১ সালে কাজ শুরু হলেও এখনো মসজিদটির নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হয় নি, তবে প্রায় ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে, সম্পূর্ণ কাজ শেষ হতে আরও প্রায় এক বছর লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্মাণপ্রতিষ্ঠান সুবাস্তু ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. কামরুজ্জামান।

তবে মুসল্লিরা নিয়মিত ৫ওয়াক্ত নামাজও আদায় করছেন মসজিদে, দূর দূরান্ত থেকেও প্রতিদিন অনেক মানুষ আসছে এই দৃষ্টিনন্দন নির্মাণশৈলী দেখার জন্য।

মদিনা মসজিদের মূল বিশেষত্ব হল, মসজিদে নববীর আদলে এতে সংযোজন করা হয়েছে বিশালাকার বৈদ্যুতিক গম্বুজ। সুইচ অন করলেই বৈদ্যুতিক মোটরের সাহায্যে এক পাশে গম্বুজটি সরে গিয়ে উন্মোচিত হয় বিশাল আকাশ। মসজিদে বসেই তখন খোলা আকাশের বিশালতা উপভোগ করা যায়। বাংলাদেশে এর আগে এমন বৈদ্যুতিক গম্বুজ নির্মিত হয় নি, এটি তাই সর্বপ্রথম হিসেবে বিশেষ আকর্ষনের জন্ম দিয়েছে। নান্দনিক এই বৈদ্যুতিক গম্বুজটি প্রতি শুক্রবার দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

এছাড়াও এই মসজিদ সৌন্দর্যের দিক দিয়েও সেরা।

মোট ৭ একর জায়গা নিয়ে সীমানা প্রাচীরও করা হবে মসজিদটির। চারতলাবিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদের ভেতরে মুসল্লিদের জন্য ১৯টি সারি করা হয়েছে। প্রতি সারিতে ১১০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। বৈদ্যুতিক গম্বুজসহ মসজিদে মোট গম্বুজ সংখ্যা নয়টি। দুইপাশে রয়েছে চারটি করে আটটি গম্বুজ আর মাঝখানে বিশাল বৈদ্যুতিক গম্বুজ।

মসজিদটিতে উঁচু মিনার আছে দুটি। এ মিনার দুটির উচ্চতা চারতলা ভবনের ওপর থেকে ১৬০ ফুট। মসজিদের কারুকাজে মার্বেল পাথর আর কাঠ ব্যবহৃত হয়েছে। কাঠগুলো আনা হয়েছে মিয়ানমার থেকে। কাঠের উপর করা সুনিপুণ কারুকার্য মুগ্ধ করে দর্শনার্থীদের।

ছয় দরজা বিশিষ্ট এ মসজিদে মুসল্লিদের উঠা-নামার জন্য একটি চলন্ত সিঁড়িসহ মোট পাঁচটি সিঁড়ি স্থাপন করা হয়েছে। অত্যাধুনিকতার দিক দিয়ে বৈদ্যুতিক গম্বুজের এ মসজিদ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য সংযোজন, যার আবেদন থাকবে বহুবছর।

প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মনোরম, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এ মসজিদ ২০১৭ সালের ৩ মার্চ প্রথম উদ্ভোদন করা হয় শুক্রবার প্রথম জুমার নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে। দেশের অন্যতম শীর্ষ আলেম মজলিসে দাওয়াতুল হকের আমির আল্লামা মাহমুদুল হাসানের ইমামতিতে প্রথম দিনের জুমার নামাজ ও আলোচনা সভায় প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক লোক অংশগ্রহণ করেন। এতে আয়োজন ও আপ্যায়ন বাবদ খরচ হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা।

আমির আল্লামা মাহমুদুল হাসানই হলেন এই মদিনা মসজিদের নির্মাতা। নিজ বাড়িতেই তিনি মসজিদটি নির্মাণ করেছেন স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী ও বিত্তবানদের কাছ থেকে পাওয়া আর্থিক সহযোগিতায়। মসজিদের পাশে নিজ নামে একটি বড় কওমি মাদরাসাও প্রতিষ্ঠা করেছেন মাওলানা মাহমুদুল হাসান। ইতোমধ্যেই মাদরাসাটি ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে।

মসজিদ মহান রাব্বুল আলামিনের ঘর। অথচ আল্লাহর ঘরকে সুন্দর করার দিকে আমরা মনযোগী হই না। এটা ঠিক না। প্রত্যেক মানুষের আল্লাহর প্রতি অপরিসীম প্রেম ও ভালোবাসা থাকতে হবে। সেই মহব্বত ও ভালোবাসা থেকে আল্লাহর ঘর নির্মাণের উদ্যোগ আল্লাহ উনার মাধ্যমে শুরু করিয়েছেন। এই মসজিদ নির্মাণের পেছনে অগণিত মুসলমান ধর্মপ্রাণ মানুষের শ্রম-ঘাম রয়েছে- উদ্ভোদনের দিন মসজিদ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আল্লামা মাহমুদুল হাসান এমনটাই বলেছিলেন।

ময়মনসিংহ শহর থেকে মাত্র ১০ কিমি দূরত্বে অবস্থিত এই মসজিদকে ঘিরে আছে নিরবিচ্ছিন্ন সবুজ প্রকৃতি। মসজিদের ভেতরের অপূর্ব সৌন্দর্যমন্ডিত নির্মাণশৈলী আর এর চারপাশের সবুজবেষ্টিত প্রান্তত হৃদয় শীতল করবে আর দিবে পবিত্র অনুভূতি, এটা বেশ নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। তবে অসাধারণ এই নির্মার্ণের খবর এখনো পৌঁছেনি বহু মানুষের কাছে, তাই একে তুলে ধরা আমাদের দায়িত্ব।

এই বিশেষ স্থাপনার বিশেষত্ব কন্টেন্ট আর্টিকেলের মাধ্যমে তুলে ধরা হলে, ময়মনসিংহের ই-ট্যুরিজমে এটি সৃষ্টি করবে নতুন দিগন্ত। সারাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল তথা দেশের বাইরের পর্যটকদেরও আকর্ষন করা যেতে পারে এভাবে, যা অত্র এলাকার সমৃদ্ধিতে বিশেষ অবদান রাখবে।

মসজিদটির সৌন্দর্য সম্পর্কে ধারণা দেয়ার জন্য ইউটিউবের একটা ভিডিও লিঙ্ক দিয়ে দিচ্ছি-
https://www.youtube.com/watch?v=PPKj1bTihwo

বৈদ্যুতিক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ
ছবিঃ বৈদ্যুতিক গম্বুজবিশিষ্ট মদিনা মসজিদ

Spread the love
খাতুনে জান্নাত আশা
This is Khatun-A-Jannat Asha from Mymensingh, Bangladesh. I am entrepreneur and also a media activist. This is my personal blog website. I am an curious woman who always seek for new knowledge & love to spread it through the writing. That’s why I’ve started this blog. I’ll write here sharing about the knowledge I’ve gained in my life. And main focus of my writing is about E-commerce, Business, Education, Research, Literature, My country & its tradition.
https://khjasha.com

Leave a Reply

Top
%d bloggers like this: