You are here
Home > ই-কমার্স > ই-কমার্স দিবস: চলতি বছর হবে দেশি পণ্যে ই-কমার্সের বছর

ই-কমার্স দিবস: চলতি বছর হবে দেশি পণ্যে ই-কমার্সের বছর

Spread the love

খাতুনে জান্নাত আশা, ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি, টেকজুম টিভি// Wednesday, 7 April, 2021

বাংলাদেশের ই-কমার্স খাতের উন্নয়ন সাধন এবং সাম্প্রতিক বিশ্ববানিজ্যের সাথে তাল মেলাতে বাংলাদেশের ট্র্যাডিশনাল বানিজ্যকে ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে শক্তিশালী ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রীতে রূপান্তর করার বৃহত্তর লক্ষ্য নিয়ে ২০১৫ সালে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) যাত্রা শুরু হয়েছিল রাজীব আহমেদের হাত ধরে এবং সেই বছরেই ৭ এপ্রিলকে ই-কমার্স দিবস এবং এপ্রিল মাসকে ই-কমার্স মাস হিসেবে ঘোষনা দিয়েছিলেন তিনি।

২০১৫ সাল থেকেই তাই প্রতিবছর ৭ এপ্রিল ই-কমার্স দিবস হিসেবে পালন করছে ই-ক্যাব।

বাংলাদেশের ই-কমার্স এর যে সম্ভাবনা এবং স্বর্নযুগ সামনে আসতে চলেছে, সেটা বুঝতে পেরেই রাজীব আহমেদ দেশের সম্ভাবনাময় ই-কমার্স খাতের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন বেগবান করতে ও সারা দেশে ই-কমার্সবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে ই-ক্যাব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

ই-কমার্সে সত্যিই অভাবনীয় পরিবর্তন এসেছে গত কয়েক বছরে। ইতিমধ্যেই ২ বিলিয়ন ডলারের ইন্ডাস্ট্রীতে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের ই-কমার্স এবং ২০২৩ সালের মধ্যে ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে তথ্য দিয়েছে জার্মান ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান। ৫০ হাজারেরও বেশি উদ্যোক্তা ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে ব্যবসা করছেন। লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে অনলাইন ভিত্তিক ই-কমার্স ব্যবসায়। ৩-৪ বছর ধরে এ খাতের প্রবৃদ্ধি প্রায় ১০০ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি বছর প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে এ খাত।

করোনা মহামারিতে আরও দ্রুতগতিতে হচ্ছে এই ই-কমার্স ব্যবসার সম্প্রসারণ। কারণ দীর্ঘ সময় ধরে লকডাউন থাকায় মানুষ অনেকটা বাধ্য হয়েই অনলাইন কেনাকাটার দিকে ঝুঁকছে এবং গত এক বছর ধরে চলা এই বৈশ্বিক মহামারী মানুষকে এখন অনেকটা অভ্যস্তই করে ফেলেছে বলা যায়, যার ফলে এখন অনেক মানুষ অফলাইনের চেয়ে অনলাইন কেনাকাটায় বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করছে।

এখন অনেকেই অনলাইনে কাঁচাবাজারও কিনতে পারছেন, ওষধ, ইলেকট্রনিকস পণ্য, পোশাক, গৃহস্থালির বিভিন্ন সরঞ্জাম ইত্যাদি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস এবং বিলাস সামগ্রী পর্যন্ত পেয়ে যাচ্ছেন যাস্ট এক ক্লিকেই। এমনকি গত বছর কোরবানী ইদ থেকে অনলাইনেই গরু দেখে ঘরে বসে পছন্দ করে কিনতে পেরেছেন অনেকে।

সব মিলিয়ে আগামী দিনগুলোতে অপার সম্ভাবনা দেখছেন ই-কমার্স খাতের উদ্যোক্তারা। কারণ অনলাইনে সহজেই কেনাকাটা করা এবং লেনদেনের যে অভ্যস্ততা তৈরি হয়েছে সবার মাঝে, তার বিশাল একটি অংশ ভবিষ্যতেও থাকবে।

তবে উন্নত দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের ই-কমার্স এখনো একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে। কারণ ডেলিভারি এবং পেমেন্ট সিস্টেম নিয়ে এখনো অনেক প্রতিবন্ধকতা এই সেক্টরে রয়েছে, ক্রেতা বিক্রেতা উভয়েই এই সমস্যাগুলো ফেইস করছেন, একারণেই বাংলাদেশে ই কমার্স এখনো অন্য দেশের তুলনায় খুব সস্তায় সেবা দিতে পারছে না।

তাছাড়া বড় বড় শহরগুলোতে ই-কমার্স চালু করা গেলেও দেশের ৭০ ভাগের বেশি গ্রামীণ মানুষ এর আওতার বাইরে এখনো। তবে বাংলাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারিভাবে যে ডিজিটাল সেন্টারগুলো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, তার মাধ্যমে ই-কমার্সকে সেখানে পৌঁছে দেয়ার একটি উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই উদ্যোগটির নাম একশপ।

ইতোমধ্যে ছয়শ ইউনিয়নে এটি চালু করা হয়েছে। একশপ একটি অনলাইন লজিস্টিক এবং মার্কেটিং নেটওয়ার্ক, এর মাধ্যমে ক্রেতাদের সঙ্গে বিক্রেতাদের যোগাযোগ ঘটিয়ে দেয়া হয়। এটা নির্দিধায় দারুণ ব্যাপার হবে সঠিকভাবে এর কার্যক্রম পরিচালিত হলে।

আর ডেলিভারি এবং পেমেন্ট সিস্টেমের উন্নতি হলে, ব্যবসার খরচ কমিয়ে আনা গেলে আরও বেগবান হত এই ই-কমার্স সেক্টরের অগ্রযাত্রা এটা বেশ স্পষ্ট। সরকার ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ ডাক বিভাগকে নিয়ে সম্প্রতি ই-কমার্স ডেলিভারির জন্য কাজ শুরু করেছে, এর মাধ্যমে আশা করা যায় প্রত্যন্ত অঞ্চল্গুলোতেও বিভিন্ন পণ্য খুব সহজেই পৌঁছে দেয়া যাবে।

ই-কমার্সে এখনো অন্যতম সমস্যা ক্রেতাদের আস্থার অভাব, এর কারণ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অনলাইন প্লাটফর্মগুলোকে অপব্যবহার করে ক্রেতাদের বিভিন্নভাবে প্রতারিত করে এর মার্কেট নষ্ট করছেন। এগুলো নিয়ন্ত্রণেও বিভিন্ন সরকারি নীতিমালা আশা প্রয়োজন, তবেই ই-কমার্স মানুষের আরও আস্থার জায়গায় পরিণত হবে।

সাম্প্রতিক সময়ে ই-কমার্স সেক্টরে সবচেয়ে বেশি যে পরিবর্তনটা এসেছে, তা হল- গত কয়েক বছর আগেও বিদেশি পণ্যের বেশ দাপট ছিল অনলাইন জগতে, স্টাইল ফ্যাশন আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে পুরো ফেসবুক নিউজফিড জুড়ে থাকত বিভিন্ন বিদেশী পণ্যের লাইভ প্রদর্শনী। আর বর্তমানে সেই চিত্রটা অনেকটাই বদলে গিয়েছে।

দেশি পণ্যের সুদিন শুরু হয়ে গেছে এখন। ই-কমার্সকে ব্যবহার করে দেশীয় পণ্যগুলোকে উঠিয়ে আনার, এর একটা বিশাল এবং শক্তিশালী ই-কমার্স সেক্টর প্রতিষ্ঠার স্বপ্নটাও দেখেছিলেন ই-ক্যাবের প্রতিষ্ঠাতা রাজীব আহমেদ। এই স্বপ্নদ্রষ্টার স্বপ্ন আজ অনেকাংশেই সফল, যার ফলস্বরূপ খুব শীঘ্রই শুধু দেশীয় পণ্যের বিলিয়ন ডলার ইন্ডাস্ট্রী গড়ে উঠতে চলেছে, অনলাইনে ফিরে এসেছে ঐতিহ্যবাহী জামদানীর রাজত্ব, নতুন পরিচিতি পাচ্ছে হাজারো অচেনা অজানা হারিয়ে যাওয়া দেশীয় পণ্য।

ক্রেতাদের আগ্রহের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়ে যাচ্ছে এখন দেশীয় সব পণ্য সামগ্রী। এটা সত্যিই অভাবনীয় পরিবর্তন। এই গতিশীলতা আরও বাড়ছে এখন তাঁর অঞ্চলভিত্তিক পণ্যগুলো উঠিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়ে শুরু করা নতুন মিশন অঞ্চলভিত্তিক ই-কমার্স এর সমস্যা এবং সম্ভাবনাগুলো নিয়ে আলোচনা এবং কন্টেন্ট তৈরী।

এর যাত্রা শুরু হয়েছে বৃহত্তর ময়মনসিংহ বিভাগের ই-কমার্স সেক্টরকে কেন্দ্র করে, আশা করা যায় এটা ওয়েবের মতো পুরো দেশে ছড়িয়ে যাবে, সবাই নিজ নিজ অঞ্চলের পণ্যসামগ্রীর ই-কমার্স সমস্যা এবং সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করবে, এবং প্রচুর কন্টেন্ট তৈরী করবে।

এভাবেই দেশের ই-কমার্সের সাথে বেগবান হবে দেশীয় পণ্যের ই-কমার্সের অগ্রযাত্রা এমনটাই কামনা করছি এই ই-কমার্স দিবসে। আর তবেই এই দিবসের অন্তর্নিহিত স্বার্থকতা সঠিকরূপে প্রতীয়মান হবে।


Spread the love
খাতুনে জান্নাত আশা
This is Khatun-A-Jannat Asha from Mymensingh, Bangladesh. I am entrepreneur and also a media activist. This is my personal blog website. I am an curious woman who always seek for new knowledge & love to spread it through the writing. That’s why I’ve started this blog. I’ll write here sharing about the knowledge I’ve gained in my life. And main focus of my writing is about E-commerce, Business, Education, Research, Literature, My country & its tradition.
https://khjasha.com

Leave a Reply

Top
%d bloggers like this: