ই-কমার্স ক্লাব(E-commerce Club) কি? (পর্ব-১) ই-কমার্স বিজনেস সংবাদ by খাতুনে জান্নাত আশা - September 14, 2021September 15, 20216 Spread the lovemoreই-কমার্স ক্লাব(E-commerce Club) কি? ই-কমার্স ক্লাব(E-commerce Club)! নামটা বেশ অচেনা লাগছে তাই না! লাগারই কথা, কারণ আমাদের দেশে শুধু না গত দুই-এক সপ্তাহ আগেও বিশাল ইন্টারনেট জগতে বাংলা ইংরেজি দুই ভাবেই ই-কমার্স ক্লাব লিখে সার্চ করে একটা তথ্যও পাই নি। তবে এখন পাচ্ছি, কারণ ই-কমার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাজীব আহমেদ স্যারের পরামর্শে ইতিমধ্যেই এটা নিয়ে লেখালেখি আর মিডিয়ায় লাইভ আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। এই আর্টিকেলের উদ্দেশ্য হল, এই নতুন সম্ভাবনা নিয়ে বিশদ আলোচনা করা। ক্লাব বা সংগঠন বলতে মূলত বোঝায়, কিছু মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করে যাওয়া। আমরা সবাই বিভিন্ন ক্লাবের সাথে হয়ত পরিচিত। আমাদের দেশে এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন ক্লাবের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও বিভিন্ন ধরণের ক্লাবের দেখা পাওয়া যায়। যেমনঃ ক্রীড়া ক্লাব, ডিভেট ক্লাব, রিসার্চ ক্লাব, ফটোগ্রাফি ক্লাব, বিজনেস ক্লাব, প্রোগ্রামিং ক্লাব, রোবোটিক্স ক্লাব, ল্যাঙুয়েজ ক্লাব, বুক রিডার্স ক্লাব ইত্যাদি আরও অসংখ্য ক্লাব রয়েছে। এই ক্লাবগুলোর উদ্দেশ্য হচ্ছে, প্রত্যেক ক্লাবের নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু নিয়ে আগ্রহী ব্যাক্তিদের খুঁজে বের করে সংঘবদ্ধ করা, আলোচনা করা, নিয়মিত চর্চা করা এবং একসাথে মিলেমিশে সেই সেক্টরসহ ক্লাবের সব সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করা। আর ই-কমার্স ক্লাব(E-commerce Club) এর উদ্দেশ্য হবে, ই-কমার্স বিষয়ে সবাইকে জানানো, আগ্রহী করে তোলা, আলোচনা পর্যালোচনা এবং বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে ই-কমার্স বিষয়ক জ্ঞান বৃদ্ধি ও প্রয়োগে দক্ষ করে তোলা। ই-কমার্স ক্লাব(E-commerce Club) বলে কিছু এখনো শুরু হয় নি। কারণ ই-কমার্স ব্যাপারটা এখনো সেভাবে সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছায়ই নি। ই-কমার্স কি, এর এক্সাক্ট ব্যাখ্যা এখনো সঠিকভাবে জানে খুব কম মানুষ। অথচ ডিজিটালাইজেশনের এই যুগে পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে ই-কমার্সের উপর নির্ভর করেই। গত দুবছরের বেশি সময় ধরে কোভিড প্যান্ডেমিকের এই পুরো সময়টাই মানুষ স্বচ্ছন্দ্যে কাটিয়েছে ই-কমার্স সেক্টরকে ব্যবহার করার মাধ্যমেই। মানুষ ই-কমার্স সেক্টরের সুবিধাগুলো প্রত্যক্ষ্য বা পরোক্ষভাবে নিচ্ছে ঠিকই, কিন্তু এর সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেয়ার সুযোগ কোথাও পাচ্ছে না। কারণ ই-কমার্স সম্পূর্ণ টেকনিকাল একটা সেক্টর এবং এর পরিধিও বিশাল। এর সম্পর্কে জানতে হলে এর ব্যবহারকারীদের সবাইকেই এডুকেটেট হতে হবে। এখানে এডুকেটেট বলতে টেকনিকাল বিষয়ে পারদর্শীতা বোঝাচ্ছি। আর এই সেক্টর সম্পর্কে মানুষ তখনই শতভাগ এডুকেটেড হতে পারবে, যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বেশি বেশি ই-কমার্স বিষয়ক আলোচনা হবে। আমরা জানি, শিক্ষকরা জাতি গঠনের কারিগর আর শিক্ষার্থীরা এর উপাদান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকেই ভালো কিছুর সূচনা হয়, নতুন কিছুর উদ্ভাবন ও সৃজনশীল কাজের শুরু হয়। তাই ই-কমার্স ক্লাবের শুরুটাও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকেই হওয়া চাই। ই-কমার্স বিষয়ে জানা জরুরী কেনো? ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে পণ্য বা সেবা বিনিময় করাই হল ই-কমার্স এবং ব্যবহারকারীর ভিত্তিতে এর মূল উপাদান দুইটি- ক্রেতা ও বিক্রেতা। প্রথমত, ক্রেতা হিসেবে ই-কমার্স বিষয়ক জ্ঞান কেন জরুরী সেটা বলছি। যেহেতু ডিভাইসের মাধ্যমে পণ্য বা সেবা গ্রহন করা হচ্ছে, যা সরাসরি দেখে নেয়ার সুযোগ নেই, তাই দূর থেকেই যতটুকু সম্ভব পণ্য এবং বিক্রেতা সম্পর্কে আইডিয়া নিতে হবে। আর আইডিয়া তখনই নিতে পারবে, যখন ই-কমার্স বিষয়ক জ্ঞান থাকবে এবং অথেনটিক বিক্রেতাদের চেনার মতো দক্ষতা অর্জন করবে। এর অন্যথা হলে ঠকতে হবে। আমাদের দেশে ই-কমার্স সেক্টর ভালো করতে পারছে না, এই ক্রেতা বিক্রেতা উভয়েরই ই-কমার্স রিলেটেড জ্ঞানের যথেষ্ট অভাব বলেই। ক্রেতাদের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে শত শত অনলাইন বিজনেস পেইজের সৃষ্টি হচ্ছে এবং এরা ইচ্ছে মতো মানুষকে ঠকিয়ে একটা নির্দিষ্ট সময় পর বিজনেস গুটিয়ে উধাও হয়ে যাচ্ছে। এভাবে অনলাইন তথা পুরো ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রীরই বিশ্বস্ততা নষ্ট হচ্ছে। মানুষ ভরসা করে, আস্থা রেখে ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির ক্রেতা হতে পারছে না। এই অবস্থার সমাধান করে, এই বিশাল ইন্ডাস্ট্রির উপর মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি বিষয়ক জ্ঞান ক্রেতাদের অর্জন করা আরও বেশি জরুরী, যার মাধ্যমে তারা বিশাল ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রী থেকে অথেনটিক বিক্রেতা বা অনলাইন পেইজ খুঁজে নিয়ে স্বচ্ছন্দের সাথে কেনাকাটা করতে পারবে, তবে আর ঠকতে হবে না। এক সময় এভাবেই ধীরে ধীরে মানুষের আস্থা ফিরে আসবে এই ইন্ডাস্ট্রির উপর এবং কেনাকাটায় অভ্যস্ত হয়ে যাবে। দ্বিতীয়ত, বিক্রেতা হিসেবে ই-কমার্স বিষয়ক জ্ঞান কেন জরুরী সেটা বলছি এখন। একজন ই-কমার্স উদ্যোক্তা বা বিক্রেতার জন্য এই জগতটা আরও বিশাল। এই সেক্টরের সফল ব্যবসায়ী হতে হলে অনেক বিষয়ে জ্ঞান এবং দক্ষতা অর্জন করতে হবে। ট্র্যাডিশনাল ব্যবসার সাথে ই-কমার্স ব্যবসার বিস্তর ফারাক। কারণ এর অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ ক্রেতাদের আস্থা এবং বিশ্বস্ততা অর্জন। এছাড়া প্রোডাক্ট সোর্সিং, ফটোগ্রাফি, প্রডাক্ট প্রেজেন্টেশন, টার্গেট কাস্টমারদের কাছে পৌঁছানো, কন্টেন্ট রাইটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং, পডকাস্ট, ভিডিও অডিও প্রেজেন্টেশন, ডোমেইন হোস্টিংসহ ওয়েবসাইট তৈরী ইত্যাদিসহ আরও অনেক বিষয়ে জানতে হবে। ক্রেতা এবং বিক্রেতার ই-কমার্স বিষয়ক জ্ঞানার্জনকে সবচেয়ে সহজ করে দিতে পারে ই-কমার্স ক্লাব। ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির ক্রেতা বিক্রেতার একটা বড় অংশই হল ইয়াং জেনারেশন বা শিক্ষার্থী পর্যায়ের জনগোষ্ঠী। আর তাই এই ই-কমার্স ক্লাব(E-commerce Club) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে গড়ে উঠলে শিক্ষার্থীরা সবাই একসাথে সেখানে ই-কমার্স সম্পর্কিত আলোচনা করে এর সুবিধা অসুবিধা, ভালো মন্দ সবকিছু সম্পর্কে জানতে পারবে খুব সহজেই। যত বেশি এসব বিষয়ে আলোচনা হবে, তত বেশি সবার মাঝে ছড়িয়ে পরবে। তখন স্বাভাবিকভাবেই এই ইন্ডাস্ট্রির উন্নতি সাধন হবে, বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হবে। Like this:Like Loading... Related Spread the lovemoremore
আপু ই-কমার্স নিয়ে অনেক সুন্দর লিখেছেন। ই-কমার্স সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম। আমাদের দেশের মানুষ ই-কমার্স সম্পর্কে নলেজ খুব কম। কিন্তু আসবে একদিন যে দিন মানুষ ই-কমার্স সম্পর্কে খোলা বইয়ের মতো সব বিষয় জানতে পারবে। ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়ই কেই জানতে হবে ই-কমার্স সম্পর্কে। তবেই তো এগিয়ে যাবে দেশ, এগিয়ে যাব আমরা। বর্তমান সময়ে ই-কমার্স সম্পর্কে জানতে না পারলে পিছিয়ে যেতে হবে। তাই আমাদের সকলের প্রচেষ্টায় ই-কমার্স কে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। Reply
জ্বি আপু, ইনশাআল্লাহ এমন দিন আসবে অবশ্যই। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু এতো সুন্দর করে কমেন্ট করার জন্য 😊❤️❤️ Reply