You are here
Home > আরিফা মডেল > আরিফা মডেল – ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির রোল মডেল আরিফা খাতুন

আরিফা মডেল – ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির রোল মডেল আরিফা খাতুন

আরিফা খাতুন
Spread the love

একজন রোল মডেল আরিফা খাতুনের গল্প

 

ই-কমার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাজীব আহমেদ স্যারের সৃষ্ট এই আরিফা মডেলের মূল উদ্দেশ্য-

দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরী এবং তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রীকে তথ্যসমৃদ্ধ করা।

 

তবে এর নাম আরিফা মডেল কেন?

কে এই আরিফা?

 

স্বভাবতই সবার মনে প্রথম এই প্রশ্নটাই আসবে। আমি আজ তারই পরিচয় তুলে ধরছি আমার এই লেখার মাধ্যমে। আশা করছি এই লেখা পড়ার পর এই মডেল এবং এর নাম নিয়ে কোনো সংশয় পাঠকের মনে থাকবে না।

 

আরিফা খাতুনের পরিচয়

 

আরিফা খাতুন ময়মনসিংহ জেলার একজন দেশীয় পণ্যের ই-কমার্স উদ্যোক্তা। তার উদ্যোক্তা জীবনের শুরু হয়েছিল হ্যান্ডমেইড বেবি ড্রেস নিয়ে কাজ করার মধ্য দিয়ে। এরপর তার উদ্যোগে তাঁতপন্য এবং ব্লকের ফ্যামিলি কম্বো সেটও তিনি যুক্ত করেছিলেন। বর্তমানে তিনি দেশের ঐতিহ্যবাহী জিআই পণ্য ঢাকাই জামদানী নিয়ে কাজ করছেন।

আমরা জানি, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ঢাকার বাইরের যে কোনো জায়গা থেকে ই-কমার্সকে কেন্দ্র করে কোনো নারী উদ্যোক্তার কাজ করে যাওয়া খুব বেশি চ্যালেঞ্জিং একটা ব্যাপার। অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে তাদের যেতে হয়। কিন্তু আরিফা খাতুন হাজারো প্রতিকূলতার মোকাবিলা করেই টিকে ছিলেন এই ইন্ডাস্ট্রির একজন নিয়মিত উদ্যোক্তা হিসেবে এবং নিজের উদ্যোগের মাধ্যমে দেশীয় পন্যকে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে। আর এভাবেই তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের দেশীয় পণ্যের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে।

তবে আরিফা খাতুন তার যে পরিচয় দিতে বেশি গর্বিত অনুভব করেন, তা হল তিনি ই-ক্যাব প্রেসিডেন্ট রাজীব আহমেদ স্যারের অনুগত ছাত্রী। তিনি মনে করেন স্যার আছেন বলেই তিনি আজ শুন্য থেকে সেরা হওয়ার দৌড়ে সফল।

হ্যাঁ, সত্যিই তাই। রাজীব আহমেদ স্যার এদেশের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির সেরা গাইড, তিনি দেশে শিক্ষিত আর দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরীর জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে চলেছেন অনেক বছর ধরে। উনার অমূল্য গাইডলাইন যারাই দীর্ঘ সময় অনুসরণ করেছে তারাই আজ এই ইন্ডাস্ট্রির সফলদের কাতারের শরীক হয়েছেন। স্যার লেখাপড়ার শক্তিতে এগিয়ে যেতে বলেন সবাইকে, কারণ ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি দক্ষদের জায়গা।

রাজীব আহমেদ স্যারের গাইড অনুযায়ী এই লেখাপড়ার শক্তিতে এগিয়ে যাওয়ার জন্যই অক্লান্ত পরিশ্রম করে গিয়েছেন আরিফা খাতুন। রাজীব আহমেদ স্যারের লাখো শিক্ষার্থীর মাঝে উনার পার্থক্য হল-

তিনি একা এগিয়ে যান নি, যেতে চান নি, উনি চেয়েছেন বৃহত্তর ময়মনসিংহের প্রত্যেকটা উদ্যোক্তাদের নিয়ে এগিয়ে যেতে। আর এর জন্য দিন-রাত খেটেছেন। নিজের উদ্যোগের কাজ প্রায় বন্ধ করে প্রত্যেকটা উদ্যোক্তাকে সময় দিয়েছেন, নিয়মিত গাইড করেছেন। পড়াশোনার মাধ্যমে দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব বুঝিয়েছেন, মোটিভেট করেছেন এবং সফলও হয়েছেন। ময়মনসিংহের অনেক উদ্যোক্তার এগিয়ে যাওয়ার পথ এখন সুগম হয়েছে আরিফা খাতুনের চেষ্টার মাধ্যমে।

শুধু ময়মনসিংহই নয়, ধীরে ধীরে আরিফা খাতুনের এই আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত সাফল্য দেখে সারাদেশের প্রত্যেকটা অঞ্চলের উদ্যোক্তারা পড়াশোনায় আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

 

ই-ক্যাব প্রেসিডেন্ট রাজীব আহমেদের সাথে আরিফা খাতুন
ছবিঃ ই-ক্যাব প্রেসিডেন্ট রাজীব আহমেদের সাথে আরিফা খাতুন

 

এখানেই শেষ নয়।

রাজীব আহমেদ স্যারের গাইডেন্সে আরিফা খাতুন তার পরিশ্রম আর লেগে থাকার পুরষ্কার স্বরূপ টেকজুম (অনলাইন পোর্টাল) টিভির ময়মনসিংহ বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব্য পালনের সুযোগ পেলেন। আর তখন থেকে শুরু হল তার আরও এক নতুন জার্নি, নতুন চ্যালেঞ্জ। টেকজুম প্রতিনিধি হিসেবে তার দায়িত্ব্য তখন নিজ বিভাগের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির সমস্যা এবং সম্ভাবনাগুলোকে সমৃদ্ধ আর্টিকেলের মাধ্যমে তুলে ধরা।

 

আরিফা খাতুন এই কাজেও তার দক্ষতার পরিচয় রেখে চলেছেন। তার লেখার মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ময়মনসিংহের অনেক অজানা তথ্য, সমস্যা এবং সম্ভাবনা উঠে এসেছে। এবং রাজীব আহমেদ স্যারের পরামর্শ এবং তার উদ্যোগে ময়মনসিংহের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির ইতিহাসে প্রথম সফল গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, যার মাধ্যমে অনেক সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচিত হয়েছে এই অঞ্চল এবং এর সমৃদ্ধির জন্য।

 

আরিফা খাতুনের সাফল্যের জার্নিটা অনেক বড় এবং তার এই সাধারণ আরিফা থেকে একজন রোল মডেল হয়ে উঠার জার্নিটা অনেক বেশিই চ্যালেঞ্জিং। সেই পরিশ্রম, আত্মত্যাগ, দীর্ঘ সময় লেগে থাকা, শতভাগ ডেডিকেশন, একের পর এক নতুন সব চ্যালেঞ্জ জয়, এই সবকিছু লেখার ভাষায় হয়ত তুলে ধরা সম্ভব নয়।

আরিফা খাতুন সেরা

 

আমরা সবাই আসলে সেরা হতে চাই, তবে সেরা হওয়ার জন্য নিজেকে তৈরী করতে যে সময়, শ্রম, আর ডেডিকেশনটা দরকার এটা কেউ দিতে চাই না!! আর যারা সেরা হওয়ার চিন্তা করার থেকে বরং নিজের সেরা শ্রম আর মেধাকে কাজে লাগানোর জন্য দিন রাত এক করে সময় দিয়ে যায়, তারাই এক সময় সেরাদেরও শীর্ষে থাকে।

ময়মনসিংহের আরিফা খাতুন কিন্তু তাই করেছেন, নিজের এবিলিটির সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করেছেন দক্ষতা অর্জনের জন্য। তাই এখন তিনি একজন রোল মডেল। তিনি নিজের প্রত্যেকটা দায়িত্ব শতভাগ ইফোর্ট দিয়ে পালন করেছেন, কোনো অজুহাত দেয়ার কথা চিন্তাও করেন নি। আপু দেখিয়েছেন শুন্য থেকে সেরা হওয়ার পথ যদিও মসৃন না, কিন্তু অসম্ভবও না। দরকার শুধু নিয়মিত স্টাডির সাথে থেকে নিজেকে ডেভেলপ করা।

 

আরিফা খাতুন লিডারশীপের অনন্য উদাহরণ 

 

আরিফা খাতুন একজন আদর্শ লিডার হতে পেরেছেন  এজন্য যে, তিনি শুধু একা নিজের কথা ভাবেন নি। একটা বৃহত্তর অঞ্চলের প্রত্যেকটা উদ্যোক্তার কথা ভেবেছেন, সবাইকে একি গাইডলাইনে চলতে উৎসাহিত করেছেন, স্টাডি এবং স্কিল ডেভেলপমেন্টের গুরুত্ব বুঝিয়েছেন, সব মিলিয়ে কোন পথে ডেডিকেটেড ভাবে চললে আসবে সফলতা সেই পথের সন্ধ্যান দিয়েছেন।

এই পথে সফলতা হয়ত খুব দ্রুত আসবে না, তবে যখন আসবে তখন সেটা হবে দীর্ঘস্থায়ী। কারণ নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারলে, স্টাডির মাধ্যমে একটা কনফিডেন্স তৈরী হলে, জ্ঞান বৃদ্ধি পেলে আপনার সাফল্য এক সময় এমনিই আসবে। এরজন্য কারো উপর নির্ভরশীল হওয়ার প্রয়োজন পরবে না।

আর রাজীব আহমেদ স্যারের Digital Skills for Bangladesh (DSB) নামক ফেসবুক ই-লার্নিং প্লাটফর্মের স্টাডি গাইডলাইন খুবই সাধারণ, একদম বেসিক শেখার জন্য। যেমন আপনি গ্রেজুয়েট হওয়ার পরও বাংলা বা ইংলিশে কয়েক লাইন টাইপ করতে সমস্যা হয়ে যায়, ডিএসবিতে নিয়মিত ১০ মিনিট রাইটিং এবং প্রেজেন্টেশন প্র‍্যাক্টিস করে গেলে হাজার হাজার শব্দ দৈনিক টাইপ করা কোনো ব্যাপারই মনে হবে না।

আপনি ১৬-১৮ বছরের একাডেমিক স্টাডি শেষ করার পরও ইংরেজি পড়তে ভয় পান, অথচ সার্চ ইংলিশের (Search English) রিডিং সিলেবাস অনুযায়ী যাস্ট চোখ বুলিয়ে ২-১ মাস ইংরেজি পড়ে গেলেও, ইংরেজি পড়া আপনার কাছে সবচেয়ে সহজ আর আনন্দময় কাজ মনে হবে।

এগুলো ছাড়াও Razib Ahmed (Founder President of E-CAB) স্যারের স্টাডি রিলেটেড যতগুলো গাইডলাইন আছে, সবই খুবই সহজ সাধারণ, কিন্তু এগুলোর কার্যকারিতা খুবই সুদূরপ্রসারী।

আরিফা মডেলের উদ্দেশ্যই হলো এই গাইডলাইনগুলোতে মানুষকে উৎসাহিত করে তোলা। এই স্কিলগুলো অর্জনের মাধ্যমে যে কেউ তার নিজ সেক্টরের সেরা হতে পারে। আর যারা ই-কমার্স সেক্টরে কাজ করতে উৎসাহী, তারা এই স্কিলগুলোর প্রয়োগ করে আমাদের দেশের প্রত্যেকটা অঞ্চলের বিশেষত্ব ইন্টারনেটের মাধ্যমে তুলে ধরে, দেশের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি কে তথ্য সমৃদ্ধ করবে।

 

দক্ষতা অর্জনে অনুপ্রেরণার নাম আরিফা খাতুন

 

সময় এখন 4th Industrial Revolution বা ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের।

তাই এখন আপনি শুধু আপনার ডিগ্রী, সার্টিফিকেট বা রেজাল্ট দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে পারবেন না, এ যুগে স্ট্রংলি নিজেকে টিকিয়ে রাখতে হলে আপনাকে স্কিল্ড হতে হবে, আপনার টেকনিকাল এক্সপার্টাইজ থাকতে হবে।

আপনি যদি স্কিল্ড হোন তবে অনায়াসে স্কিল্ডহীন অনেক বড় বড় ডিগ্রী আর সার্টিফিকেটধারীদের থেকে অনেক বেশি এগিয়ে থাকবেন। আপনি পাবলিক ইউনিভার্সিটি তে পড়েছেন, নাকি প্রাইভেট থেকে, নাকি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এটা এখন আর কোনো ম্যাটারই করে না, যা ম্যাটার করে তা হচ্ছে আপনার অর্জিত জ্ঞান, দক্ষতা আর ডেডিকেশন।

এমনটাই কিন্তু প্রমাণ করে দেখিয়েছেন আমাদের ময়মনসিংহের গর্ব আরিফা খাতুন। তিনি কিন্তু জাতীয় ভার্সিটি থেকে স্টাডি কমপ্লিট করেছেন, যা উনার এগিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো নেগেটিভ ইফেক্ট ফেলেনি। কারণ নিজের যোগ্যতা আরিফা খাতুন প্রমাণ করেছেন নিজেকে অনেক দিক থেকে দক্ষ করার মাধ্যমে। আর তাই ই-কমার্স সেক্টরে দেশসেরা একজন হয়ে উঠেছেন তিনি, যাকে অনুসরণ করে দক্ষতা অর্জনের দিকে মনোযোগী হচ্ছে লাখো মানুষ।

এটাই কিন্তু জরুরী, এভাবে সারাদেশে আরিফা মডেলের মেসেজ পৌঁছে যাবে, সবাই নিজেদের দক্ষ করে তুলে দেশের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে এগিয়ে আসবে এটাই প্রত্যাশা করি।

কিছু মানুষ সমাজে নতুন কোনো পরিবর্তনের সূচনা করে, যা সমাজটাকে পজিটিভলি বদলে দেয়। এমন মানুষের সংখ্যা নেহাতই নগন্য। তবে তাতেই বা কি এসে যায়, সেই সংখ্যালঘু মানুষগুলোর নিঃস্বার্থ কাজের দ্বারাই কিন্তু সমাজ এবং দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর উন্নতি সাধন হয়ে থাকে।

আমাদের Arifa Khatun (https://www.facebook.com/tania.siddika.9) এই সংখ্যালঘুদের একজন, যিনি নিজের লাভক্ষতির চিন্তা দীর্ঘ সময় ধরে একদম সাইডে রেখে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে গিয়েছেন ময়মনসিংহ অঞ্চলের উদ্যোক্তাদেরকে ই-কমার্স সেক্টরে পরিচিত করার জন্য, Razib Ahmed স্যারের গাইডলাইন ফলো করে স্টাডি করে গিয়েছেন নিজের স্কিপ ডেভেলপ করার জন্য, রাত-দিন সময় দিয়ে সবাইকে স্কিল ডেভেলপ করার প্রয়োজনীয়তা বুঝিয়েছেন, স্টাডিতে আগ্রহী করে তুলেছেন আর প্রতিনিয়ত নিজ অঞ্চলের জানা অজানা তথ্য সম্ভার অনলাইন পোর্টালে আর্টিকেল লেখার মাধ্যমে, ফেসবুকে নিত্য কন্টেন্ট লেখার মাধ্যমে প্রেজেন্ট করে চলেছেন।

আরিফা খাতুনকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে সারাদেশ থেকেই লাখো মানুষ এখন উনাকে ফলো করছেন।

আরিফা মডেলের উদ্দেশ্যই হলো, আরিফা খাতুনকে দেখে সারাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এমন অসংখ্য ডেডিকেটেড এবং স্কিল্ড মানুষ তৈরী হবে, যারা নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থকে সাইডে রেখে বৃহৎ স্বার্থ নিয়ে ভাববে এবং এরাই হবে ইনশাআল্লাহ দেশের প্রকৃত হিউম্যান রিসোর্স।

 


Spread the love
খাতুনে জান্নাত আশা
This is Khatun-A-Jannat Asha from Mymensingh, Bangladesh. I am entrepreneur and also a media activist. This is my personal blog website. I am an curious woman who always seek for new knowledge & love to spread it through the writing. That’s why I’ve started this blog. I’ll write here sharing about the knowledge I’ve gained in my life. And main focus of my writing is about E-commerce, Business, Education, Research, Literature, My country & its tradition.
https://khjasha.com

3 thoughts on “আরিফা মডেল – ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির রোল মডেল আরিফা খাতুন

Leave a Reply

Top
%d bloggers like this: